অসমাপ্ত কথোপকথন
সঙ্গীতা কর (কলকাতা)
কে তুমি কে তুমি এই অন্ধকারে ঘিরে রেখেছো আমাকে
বড্ড হাঁসফাঁস লাগে এভাবে কি জড়িয়ে থাকা যায়?
দেখো আকাশের তারা গুলো কেমন মুক্ত স্বাধীন
হয়তো বা তুমিও!
থেমে গেলে কবি থেমে গেলে এই পর্যন্ত, বলো আরও কিছু থাকুক স্বীকারোক্তি, শুধু অবহেলার বিষবাষ্প নয় কিছু অমলিন বাতাস ছড়িয়ে দাও তাতে উড়বো আমি মুক্ত বিহঙ্গের মতো।
তোমার এখনও সাধ মুক্ত হওয়ার? তুমি যে মহামুক্তির অতলে হারিয়ে গিয়ে আমাকে বেঁধে ফেলেছো গ্লানিতে দিয়ে গেছো ছন্দহীন প্রাণ বহন করার করুণ বোঝা।
কবি ,আমি যে সামান্যা নারী, কি এমন সাধ্য আমার তোমার পিঠে বোঝা দেওয়ার? আমি লিখতে জানি না, বুঝি না তোমার কবিতার নিগূঢ় তত্ত্ব।
ভুল ভুল একথা, তুমিই ছিলে আমার কবিতার সেরা পাঠিকা, অযথা বিহারীর প্রশংসায় শান বাঁধিয়েছো যে কলমে, দক্ষ সাহিত্য সচেতক ছাড়া যে তা অসম্ভব।
তাই বুঝি বেশিদিন দেখার কষ্ট সহ্য করতে পারলে না ঠাকুরপো, এতো বোঝো তুমি শুধু বোঝোনি নারী হৃদয়ের গভীরতা, বোঝোনি না বলা কথা অব্যক্ত যন্ত্রণা হয়ে কতটা আঘাত দিতে পারে।
আঘাত কি আমার-ই কম গো সেজোবৌঠান আফিম এর বিষাক্ত প্রভাব কিছু সময়ের, এই যে প্রতিদিন তুষের আগুনের মতো যন্ত্রণা সহ্য করে দগ্ধে দগ্ধে মরছে হৃদয় এ তো মৃত্যুর চেয়েও বেশি যন্ত্রণাময়।
বালাই ষাট ও কথা মুখে আনতে নেই, তোমার কষ্ট আজও আমাকে ক্ষতবিক্ষত করে দেয় আমি যে সইতে পারি না, শুধু জীবনে নয় মৃত্যুতেও মায়ায় বেঁধেছো গভীরভাবে।
তবে সে কথা কেন বলোনি আগে, আমার হৃদয়ের মালা দিয়ে পূজা করতাম তাকে, বিবাহ নামক ঘটে না পুড়ে আমাদের ভালোবাসা অন্তরে বহন করতাম অনেক অনেক বছর ধরে।
আমি যে তোমার প্রতিষ্ঠা চেয়েছি, চেয়েছি তোমার ভালো থাকা, নিজের খারাপ থাকা লুকাতে গিয়ে আঘাতে আঘাতে ভেঙে গেছে বুকের পাঁজর, নিঃসঙ্গ জীবনের পুতুল খেলার সাথী অন্যের হয়ে গিয়ে প্রতিটি মুহূর্তে ধরা দিয়েছিল বিষাক্ত নাগিনীর মতো।
তুমি কি ভালোবেসেছিলে আমায় সেজো বৌঠান, চন্দ্র তারা সাক্ষী রেখে একবার বলে যাও সে কথা
তুমি কবিতা লেখায় মন দাও কবি, কাজ নাই অন্য কথা শোনার, ব্যাথার আগুনে জ্বলে পুড়ে সৃষ্টি করো কালজয়ী কবিতা আমি সেই কবিতার মাঝেই বেঁচে থাকবো উজ্জ্বল তারা হয়ে ।
একবার সামনে এসো, ছুঁয়ে দেখি তোমার অস্তিত্ব, আসছো না যে,কোথায় গেলে কোথায় হারিয়ে গেলে সেই লুকোচুরি খেলার মতো? এতো অন্ধকার কেন চারিদিকে? তবে তুমিই কি ছিলে আমার আলোর দিশা?