খায়রুল আনাম,
গ্যাংস্টারদের সাথে গুলির লড়াই
আহত এসটিএফ ইন্সপেক্টর কার্ত্তিক মোহনকে নিয়ে গর্বিত পুলিশ মহল ও জেলার মানুষ
মহানগরী কলকাতার প্রান্ত ঘেঁঁষা নিউটাউন উপনগরীর শান্ত পরিবেশ ৯ জুন দুপুর থেকে এখনও পর্যন্ত চর্চার বিষয় হয়ে রয়েছে। ওই দিন সেখানে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছে, সেখানে ঘাঁটি গেড়ে বসে থাকা পাঞ্জাবের দুই কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল সিংহ ভল্লার ওরফে মনজিৎ সিংহ এবং যশপ্রীত খারার ওরফে জাসসির। পাঞ্জাব থেকে ফেরার এই দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতীর সন্ধান দিতে পারলে যথাক্রমে ১০ লক্ষ ও ৫ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণাও করেছিলো পাঞ্জাব পুলিশ। আর এই গুলির লড়াইয়ে গ্যাংস্টারদের গুলিতে গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন এসটিএফের ইন্সপেক্টর কার্ত্তিক মোহন ঘোষ। তিনি এখন চিকিৎসাধীন। এই কার্ত্তিক মোহন ঘোষের সঙ্গে বীরভূমের সম্পর্কটা বেশ পুরনো। ১৯৯৮ ব্যাচের এই অফিসার নদীয়া থেকে এসে কর্মজীবনের একটা বড় সময় কাটিয়েছেন বীরভূম জেলার লাভপুর, নানুর, পাঁড়ুই, দুবরাজপুর ও নলহাটি থানার ওসি হিসেবে। অনেক সময় তিনি বিক্ষোভের মুখেও পড়েছেন। একবার শূন্যে গুলি চালিয়ে রক্ষা পেলেও মাথা ফেটেছিলো জনতার হামলায়। ঝাড়খণ্ড সীমানার দুবরাজপুর থানায় থাকার সময় পণ্ডিতপুরে ঝিটকার জঙ্গলে গাছে ঝোলানে মাওবাদী পোস্টারের সঙ্গে সকেট বোমা বাঁধা থাকা নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। তিনি অব্যর্থ নিশানায় গুলি চালিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন, সেটি সকেট বোমা ছিলো না। তা ছিলো বালিতে ভরা। তাই বিহার, ঝাড়খণ্ড হয়ে ভুট্টা বোঝাই গাড়িতে বীরভূম হয়ে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র পাচারের খবর পেয়েই তিনি তাঁর চেনা জায়গা বীরভূমে চলে এসেছিলেন ১৩ জনের একটি দল নিয়ে। শুরু করেছিলেন নজরদারি। যে গাড়িতে অস্ত্র আসছে বলে তিনি খবর পেয়েছিলেন, একাধিকবার সেই গাড়ির নম্বর প্লেট বদল করায় প্রথমে তাঁদের বিপাকে পড়তে হয়। কিন্তু ৬ জুন মহম্মদবাজারের শেওড়াকুড়ি থেকে গাড়ির পিছু নিয়ে সিউড়িতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে আব্দারপুর রেলগেটে গাড়িটি আটক করা হয়। গাড়ি ছেড়ে চালক ও তার সঙ্গী পালাবার চেষ্টা করলেও, এসটিএফ ও জেলা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ৫টি সেভেন এমএম পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৩০ রাউণ্ড গুলিও ২০ কেজি কালো এবং লাল রঙের বিস্ফোরক। ধৃত দুই অস্ত্র কারবারি মহম্মদ শামসের আলম ও শিবু কর্মকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই কী কার্ত্তিকবাবু পাঞ্জাবের গ্যাংস্টারদের কলকাতায় লুকিয়ে থাকার বিষয়টি জানতে পারেন ? আর তাই কী কার্ত্তিকবাবুকে হাতের নাগালে পেয়েই গ্যাংস্টাররা তাঁকে গুলি করেছিলো ? বিভিন্ন মহলেই এখন এই প্রশ্নটি ঘুরপাক খাচ্ছে কার্ত্তিকবাবুর আরোগ্য কামনার সাথে সাথে ।।