পত্নীর মৃত্যুবার্ষিকীতে রক্তদান ও চক্ষুদান শিবিরের আয়োজন করলেন হরিপালের বাসিন্দা
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, হরিপাল, হুগলি -:
প্রিয়তমা পত্নী মমতাজের স্মৃতিতে শাহজাহান নির্মাণ করন পৃথিবীর বিস্ময় তাজমহল। ওদিকে মুমূর্ষু মানুষের প্রাণ রক্ষার্থে প্রয়াতা পত্নীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে হুগলির হরিপালের বলরামপুরে নিজ বসতবাটীতে রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান শিবিরের আয়োজন করেন অন্বয় দে। প্রসঙ্গত নবম বর্ষীয়া কন্যা রাইয়ের আবদারে প্রয়াতা পত্নী স্বর্ণালীর প্রথম পারলৌকিক কাজের দিনেই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন তিনি। অনিবার্য কারণবশত মাঝে একবার এই শিবিরের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ১৯ তারিখের পরিবর্তে ২৩ শে ফেব্রুয়ারি এই শিবিরের আয়োজন করা হয়। এস এস কে এম ব্লাড ব্যাঙ্ক সেন্টারের সহযোগিতায় শিবির থেকে মোট ৫৪ ইউনিট রক্ত সংগৃহীত হয়। এদের মধ্যে মহিলা রক্তদাতা ছিলেন ১২ জন। শিবিরের অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ৫ জন রক্তদাতা জীবনে প্রথমবারের জন্য রক্তদান করেন। এছাড়া পাশাপাশি বেডে শুয়ে পিতা-পুত্র প্রসাদ সিংহরায় ও প্রণয় সিংহরায় এবং স্বামী-স্ত্রী শান্তনু কোনার ও চৈতালি কোনার একসাথে রক্তদান করেন। সংগৃহীত রক্ত সংশ্লিষ্ট ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মরণোত্তর চক্ষুদানের অঙ্গীকার করেন ৯ জন।
রক্তদাতাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বিনা অক্সিজেনে এভারেস্ট জয় করা পর্বতকন্যা পিয়ালী বসাক, সাইকেলে চেপে সারা ভারত জুড়ে রক্তদানের প্রসার ও প্রচার বাড়ানোর লক্ষ্যে নিয়োজিত জয়দেব রাউত সহ আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি। স্নেহময়ী মায়ের মত প্রতিটি রক্তদাতার পাশে ছিল অন্বয় কন্যা তথা মাতৃহারা কিশোরী রাই।
এস এস কে এম ব্লাড ব্যাঙ্ক সেন্টার কর্তৃপক্ষ, রাজবলহাট কালচারাল সার্কেল কর্তৃপক্ষ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'এসো বন্ধু হই'-এর সমস্ত সদস্য-সদস্যা, 'তাইকান্দো অ্যাকাডেমি অফ হরিপাল' থেকে আগত ফ্যাকাল্টি সহ সমস্ত শুভানুধ্যায়ী এবং 'ওয়েস্ট বেঙ্গল ভলিন্টাররি ব্লাড ডোনার্স সোসাইটি"র রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অন্বয় বাবু বললেন, এরা পাশে না থাকলে আমার পক্ষে কখনোই এতবড় একটা শিবিরের আয়োজন করা সম্ভব হতোনা। আশাকরি আগামীদিনেও তারা আমার পাশে থাকবেন।