প্রশাসনিক সভা ও পরিষেবা প্রদানে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

Spread the love

প্রশাসনিক সভা ও পরিষেবা প্রদানে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা

        খায়রুল  আনাম

জাতীয় নির্বাচন কমিশন এখনও পর্যন্ত লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট  প্রকাশ না করলেও, লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।  নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ আসছে রাজ্যে।  তারপরই যে কোনও সময় লোকসভা ভোটের ঘণ্টা বাজিয়ে দিতে পারে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আর নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হয়ে গেলে  সরকারিভাবে পরিষেবামূলক কোনও কর্মসূচি নিতে পারা যাবে না। তাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্রুততার সাথে তাঁর জেলা সফরের মধ্যে দিয়ে প্রশাসনিক সভা ও সরকারের পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি সেরে নিতে চাইছেন।  আর সেই তালিকায় এবার যোগ হচ্ছে বীরভূম জেলা।  সরকারিভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বীরভূম জেলা সফরের বিষয়টি এখনও চূড়ান্তভাবে ঘোষিত না হলেও,  শনিবার ১৭ ফেব্রুয়ারি  বিকালে তিনি বীরভূমে পৌঁছতে পারেন বলে ধরে নিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।

         মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে তিনি তাঁর প্রথম জেলা প্রশাসনিক বৈঠকটি করেন বোলপুরের গীতাঞ্জলি  সংস্কৃতি অঙ্গনে। এই সময় তিনি গীতাঞ্জলি সংস্কৃতি অঙ্গন সংলগ্ন সরকারি সার্কিট হাউসে ছিলেন। পরবর্তীতে  বোলপুর-শান্তিনিকেতনের পাশেই বল্লভপুর আমার কুটিরে  রাঙাবিতান তৈরী হওয়ার পর থেকে তিনি হেলিকপ্টারে এসে বিনয় ভবনের কুমিরডাঙা হেলিপ্যাডে নেমে রাঙাবিতানে যান এবং এখান থেকেই ফিরে যান। রাঙাবিতান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য জেলায় প্রশাসনিক সভায় গিয়ে আবারও রাঙাবিতানে ফিরে এসেছেন। গীতাঞ্জলি  সংস্কৃতি অঙ্গন ছাড়া তিনি একবার আমোদপুরে ও অন্যবার ইলামবাজারে জেলা প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন। কিন্তু তিনি জেলা সদর শহর সিউড়িতে একবারও জেলা প্রশাসনিক সভা এবং সরকারের পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান করেননি। এখানকার  তিন বারের  দলীয় সাংসদ শতাব্দী রায় চেষ্টা করে আসছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়ে তাঁর নির্বাচন ক্ষেত্র সিউড়িতে একটি সভা করতে। ইতিপূর্বে  কেন্দ্রীয়  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  বিজেপির অমিত শাহ সিউড়িতে সভা করে গিয়েছেন। তাই এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার  ১৭ ফেব্রুয়ারি জেলায় এসে  পরদিন রবিবার ১৮ ফেব্রুয়ারি সিউড়ির চাঁদমারি মাঠে প্রশাসনিক  সভা  এবং সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান করে কলকাতায় ফিরে যাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। এজন্য সিউড়ির সার্কিট হাউস সাজিয়ে তোলার কাজেও হাত দেওয়া হয়েছে।

        মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা প্রশাসনিক বৈঠক এবং সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান যে সিউড়িতে করবেন তা স্পষ্ট হয়েছে জেলা প্রশাসনিক তৎপরতায়। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি একই দিনে সিউড়িতে দু’টি প্রশাসশনিক বৈঠক করলেন দ্রুততার সাথে।  জেলা প্রশাসন ভবনে তিনি প্রথম বৈঠকটি করেন  জেলার সব থানার আইসি, ওসি, জেলার সমস্ত ব্লকের বিডিও এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে। দ্বিতীয় বৈঠকটি জেলাশাসক করেন সিউড়ি সার্কিট হাউসে। সেখানে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রামপুরহাটের বিধায়ক তথা  রাজ্য বিধানসভার  ডেপুটি স্পিকার ড. আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বোলপুরের বিধায়ক  তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী,  লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ  সিংহ। তবে, তাঁরা কেউ-ই মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর নিয়ে চূড়ান্তভাবে কিছুই জানানি।  এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোাধ্যায় যে  সিউড়িতেই জেলা প্রশাসনিক বৈঠক এবং সরকারি পরিষেবা প্রদান সভা করবেন, তা নিয়ে প্রশাসনিকস্তরে কোনও দ্বিমত উঠে আসছে না। আবার এমনও মনে করা হচ্ছে যে, রাজ্যের বিভিন্ন  ক্ষেত্রে অশান্তির কারণে যদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার বাইরে না থাকেন তাহলে তিনি  সোমবার ১৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে সরাসরি সিউড়ি এসে চাঁদমারি মাঠে প্রশাসনিক বৈঠক এবং সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান করে ওই দিনই কলকাতায় ফিরে যাবেন।।

ছবি : কাজ চলছে সার্কিট হাউসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *