প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হলো ব্রতচারীর আসর ও প্রদর্শনী

Spread the love

প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হলো ব্রতচারীর আসর ও প্রদর্শনী

নীহারিকা মুখার্জ্জী, ফলতা,

একটা সময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের মুখে মুখে ‘চল কোদাল চালাই, হবে শরীর ঝালাই…’ এই ব্রতচারী ছড়াটি ঘুরে বেড়াত। পরাধীন ভারতের নাগরিকদের মধ্যে দেশপ্রেম, জাতীয় চেতনা ও নাগরিকত্ববোধ জাগিয়ে তোলা এবং আধ্যাত্মিক ও সামাজিক উন্নতির লক্ষ্যে ১৯৩২ সালে গুরুসদয় দত্ত ব্রতচারী আন্দোলন শুরু করেন। লক্ষ্য ছিল জ্ঞান, শ্রম, সত্য, ঐক্য ও আনন্দ- এই পঞ্চব্রতে দীক্ষিত হয়ে ব্রতচারীরা চরিত্র গঠন ও দেশসেবায় আত্মোৎসর্গ করবে। খুব শীঘ্রই এই আন্দোলন জনপ্রিয়তা লাভ করে।

স্বাধীনতার পরেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শিশুদের মধ্যে নৃত্যের মাধ্যমে এই সঙ্গীত চর্চা দেখা যেত। তারপর একসময় এটি কার্যত অবলুপ্তির পথে চলে যায়।

কিন্তু শিক্ষাদান থেকে সৌন্দর্য – সবদিক দিয়ে ব্যতিক্রমী ভূমিকা পালন করে চলা বিখ্যাত বাঙালি বৈজ্ঞানিক আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য দক্ষিণ ২৪ পরগণার ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকদের সৌজন্যে গত ছ’বছর ধরে ব্রতচারী গান শেখার সুযোগ পেয়ে চলেছে। শুধু শেখা নয়, তাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য বছরে দু’বার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় ব্রতচারীর আসর ও প্রদর্শনী।

কলকাতার বিখ্যাত ব্রতচারী শিক্ষক বনী চ্যাটার্জি, মিঠু মণ্ডল, অরিত্র মালী এবং সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর সহ জয়দেব নস্কর, শুভাশিস হালদাররা শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ব্রতচারী সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। তাদের অনুপ্রেরণা ও সাহচর্যে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য ও মূল্যবোধের শিক্ষা লাভ করে।

গত ২৪ শে ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে  অনুষ্ঠিত হয় ব্রতচারীর আসর ও প্রদর্শনী। একই রঙের পোশাকে সুসজ্জিত বিদ্যালয়ের প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। অসাধারণ ছিল সেই দৃশ্য। নৃত্যের তালে তালে তাদের প্রদর্শনী উপস্থিত অভিভাবক ও এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মুগ্ধ করে। হাততালি দিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর বললেন – পুঁথিগত শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে তার বাইরে বেরিয়ে এসে ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য ও মূল্যবোধের শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের ছাত্রছাত্রীদের সেই শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করি। আমার সৌভাগ্য সব বিষয়ের মত এব্যাপারেও আমি আমার সহকর্মীদের পাশে পেয়েছি। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *