ফারহাদ এর নেতৃত্বে মনিপুর ইস্যুতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ধিক্কার ও প্রতিবাদ মিছিল
রফিকুল হাসান, বারাসাত: গত দুই মাস ধরে হিংসার আগুনে জ্বলছে বিজেপি শাসিত মণিপুর। এখনও পর্যন্ত কয়েকশো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ঘর ছাড়া প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ। তা নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে নিষ্কৃয়তার অভিযোগ উঠেছে। আর এই ইস্যুতেই গত ২১ জুলাই ধর্মতলায় শহীদ দিবসের জনসভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র তোপ দাগতে দেখা গিয়েছিল।
বিজেপি শাসিত রাজ্য মণিপুরে (Manipur) দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ঘটনায় তোলপাড় হয়েছে গোটা দেশ। এবার সেই ঘটনার আঁচ এসে পড়ল উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসাত শহরে। বৃহস্পতিবার পঃবঃ তৃণমূল মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি একেএম ফারহাদ এর নেতৃত্বে কয়েক হাজার মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষিকা ও সমাজের বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার নিয়ে প্রতিবাদ ও ধিক্কার মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। উঃ চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাত ওয়াকফ পরিষেবা কেন্দ্র থেকে শুরু করে চাপাডালি মোড় হয়ে শেঠপুকুরের সামনে থেকে থানা হয়ে কাছারি ময়দানে শেষ হয়।
মনিপুরের নারকীয় ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে উঃ চব্বিশ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের লড়াকু মুখ তথা মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি একেএম ফারহাদ বলেন প্রথমে গণধর্ষণ, তারপর সম্পূর্ণ নগ্ন করে রাস্তায় হাঁটানো। এতেই শেষ নয়। নির্যাতিতারা যখন রেহাইয়ের আর্জি জানিয়ে কাঁদতে কাঁদতে হাঁটছেন, তখনও তাঁদের সঙ্গে শ্লীলতাহানি চলছে। হিংসায় জর্জরিত বিজেপি শাসিত মণিপুরে নারী নিগ্রহের এমন ভিডিও ভাইরাল হতেই শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। প্রতিবাদের আওয়াজ উঠেছে আসমুদ্রহিমাচল।উক্ত ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করা হচ্ছে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে। জনবিচ্ছিন্ন বিজেপি দাঙ্গাবাজ সরকারের পতন আশু প্রয়োজন। এরজন্য INDIA জোটের হাত ধরে নতুন সূর্যের আলোয় আলোকিত হবে ভারতবর্ষ, ভূপতিত হবে NDA জোট। মা মাটি মানুষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস সংবদ্ধভাবে দেশের শান্তি সম্প্রীতি ঐক্য রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
ধিক্কার ও প্রতিবাদ মিছিল থেকে মাদ্রাসার শিক্ষকরা আওয়াজ তোলেন, অবিলম্বে হিংসায় জর্জরিত মণিপুরে শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। মহিলাদের উপর পাশবিক অত্যাচারের ঘটনায় যুক্ত থাকা দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। ক্ষতিগ্ৰস্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও চাকরি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। শিক্ষকরা বলেন আমাদের প্ল্যাকার্ডের এক একটা স্লোগানের মধ্যে দিয়ে বিজেপি সরকারের কর্মক্রিয়াকে তীব্র ধিক্কার জানানো হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠনের কর্মীরা সারাবছর নিরলসভাবে মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে যা আগামী দিনগুলোতেও করে যাবে। প্রসঙ্গত মণিপুরের জাতিদাঙ্গায় সরকারি হিসেবে এ পর্যন্ত ১২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন। মহিলারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সংসদে বিরোধীরা মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের (N Biren Singh) পদত্যাগ দাবি করছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) কাছে কৈফিয়ত চাইছেন। কিন্তু এখনও কিছুই হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) ইম্ফলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছিলেন অনেক আগেই কিন্তু তিনি বেগতিক দেখে ফিরে আসেন। উত্তর-পূর্বের রাজ্যের পরিস্থিতি এখনও অগ্নিগর্ভই। বলা যেতে পারে ডবল ইঞ্জিন সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। তাই চব্বিশ সালে লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার গঠিত হবে বলে আশাবাদী মাদ্রাসার শিক্ষকরা।
সর্ব ভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস দল অনুমোদিত একমাত্র মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি একেএম ফারহাদ এর নেতৃত্বে ধিক্কার ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি মোঃ কুতুব আক্তার, সংগঠনের অন্যতম কর্মকর্তা নূরুল হক, সওকাত হোসেন পিয়াদা, প্রধান শিক্ষিকা শম্পা পাত্র, ইমতিয়াজ হোসেন, হাসিবুর রহমান, জার্জিস হোসেন,রেজাউল হক,নাম দার শেখ, জাকির হোসেন,আব্দুল খালেক খান, সাহাবুদ্দিন চৌধুরী,সুরজিৎ বিশ্বাস, ধর্মীয় গুরু পরমানন্দ মহারাজ, ফাদার সঞ্জীব, ফাদার শ্যামল, বাকিবিল্লাহ, মাওলানা হাসানুজ্জামান, মাওঃ আসরাফ উদ্দিন, আরসাদুজ্জমান, মিনজারুল মন্ডল, তাপসী মন্ডল, রহমানিয়া আজমি সহ অসংখ্য শিক্ষক শিক্ষিকা ও সমাজের বিশিষ্টজনেরা।