বিচারপতি সিনহার বিচার্য বিষয় বদলে জনস্বার্থ মামলা,হস্তক্ষেপ করলো না ডিভিশন বেঞ্চ
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহা।’কেন তাঁর এজলাসেি পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা কিংবা অতি সক্রিয়তার মামলার শুনানি হবে?’ এই প্রশ্ন তুলে নজিরবিহীনভাবে বিচারপতি অমৃতা সিনহার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। বৃহস্পতিবার অবকাশকালীন বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চে সংশ্লিষ্ট জনস্বার্থ মামলাটির শুনানি হয়।বিচারপতি অমৃতা সিনহা বিচার্য বিষয় বদলের আবেদনে এখনই হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন বিচারপতি কৌশিক চন্দ এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, -‘এই মামলায় এখনই কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না’। মামলাটি ফেরত পাঠানো হয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের কাছে।কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সিনহার এজলাসে দেওয়া মামলা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওই মামলা করা হয়েছে। পুলিশ সংক্রান্ত মামলার বিচার তিনি নিরপেক্ষ ভাবে করতে পারবেন কি না?সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন মামলাকারী।গরমের ছুটির পর আগামী ১০ জুন থেকে আবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচার প্রক্রিয়া নিয়মিত শুরু হবে। সাধারণত, কোনও ছুটির পর বিচারপতিদের ‘রস্টার’ পরিবর্তিত হয়। অর্থাৎ, তাঁরা এত দিন যে ধরনের মামলার বিচার করছিলেন, সেই বিষয় বদলে যায়। বিচারপতি সিনহা এতদিন হাইকোর্টে পঞ্চায়েত এবং পুরসভার বিভিন্ন মামলা শুনতেন। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে ‘রস্টার’ বদলেছে। বিচারপতি সিনহা কে দেওয়া হয়েছে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং অতি সক্রিয়তা সংক্রান্ত মামলাগুলি। ছুটির পর প্রথম দিন থেকেই আদালতে এই মামলার বিচার করার কথা তাঁর। কিন্তু সেই মামলাতেই বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। বিচার্য বিষয় বদলের আর্জি জানানো হয়।প্রসঙ্গত, কোনও বিচারপতির রায় পছন্দ না হলে তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা, এজলাসের সামনে ধর্না, এজলাস বয়কট, এমনকি, ওই এজলাস থেকে মামলা সরানোর জন্য প্রধান বিচারপতির এজলাসে আবেদন— সবই হয়েছে অতীতে। তবে কোনও বিচারপতির এজলাসে মামলা শুরুর আগেই তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন আইনজীবীদের বড় অংশ । আগামী ১০ জুন গরমের ছুটির পরে হাইকোর্ট চালুর প্রথম দিন থেকেই বিচারপতি সিনহার পুলিশ সংক্রান্ত মামলার বিচার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার আগে তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই মামলা।এর আগে বিচারপতি অমৃতা সিনহা পুরসভা ও পঞ্চায়েতের একাধিক মামলা শুনেছেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একের পর এক তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিয়েছেন তিনি। এমনকি তদন্তের গতি প্রকৃতি নিয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহার ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদেরও। হাইকোর্টের নিজস্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা ও অতি সক্রিয়তার মামলাগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই বিচারপতি সিনহার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা।জানা গেছে, আগামী সোমবারের পর কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই বিষয়টি উঠবে।তখনই স্পষ্ট হবে এই জনস্বার্থ মামলাটি। প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার ‘স্বামী’ আইনজীবীর বিরুদ্ধে এক মামলায় রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডির অতি সক্রিয়তার অভিযোগ উঠে।এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট অবধি যায়।