বোলপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো না হওয়ায় চাঞ্চল্য

Spread the love

খায়রুল আনাম,

বীরভূম : এলাকার একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো না হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে বোলপুর শহর। বোলপুর পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে নিম্ন বাঁধগোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৭৩ সালে স্থাপিত এলাকার একমাত্র এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতি বছরই সরস্বতী পুজো হয়ে আসছে। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে রয়েছেন ৫ জন শিক্ষক। সোমবার সকালে বিদ্যালয়ের কচিকাঁচা থেকে শুরু করে বহু অভিভাবক সকালে এসে দেখেন বিদ্যালয়ের গেটে তালা মারা। তাদের অনেকেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে কেন বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো এবার বন্ধ করে দেওয়া হলে তিনি তার কোনও সদুত্তর না দিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণভাবে জানিয়ে দেন যে, এটা তার ইচ্ছা। তিনি এজন্য কাউকে জবাবদিহি করবেন না। এরপরই তিনি তার মোবাইল বন্ধ করে দেন। বিদ্যালয়ে সরস্বতী বন্ধ হওয়ার কথা জানাজানি হতেই গোটা এলাকার অভিভাবক থেকে শুরু করে ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং অন্যান্যরা বন্ধ বিদ্যালয়ের গেটের সামনে জমায়েত হতে শুরু করেন। কচিকাঁচা থেকে শুরু করে বহু পুরুষ- মহিলা এই ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিদ্যালয়েরই এক প্রাক্তনী প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগও করেন। পরে তিনি জানান, প্রধান শিক্ষক তাকে যে ভাষায় অপমান করেছেন, তা তিনি উচ্চারণ করতে পারবেন না। তখন উপস্থিত সকলেই সিদ্ধান্ত নেন যে, তারা নিজেরাই সরস্বতী প্রতিমা নিয়ে এসে বন্ধ বিদ্যালয়ের গেটের বাইরেই পুজো করবেন। সেইমতো পুজোর আয়োজন করা হয় দুপুর নাগাদ। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তা গিয়ে পৌঁছয় জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি ড. প্রলয় নায়েকের কাছে। তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে দেখেন, তার মোবাইল বন্ধ। এদিকে এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার খবর পেয়ে পৌঁছে যান ঘটনাস্থলে। তারপর বিদ্যালয়ের গেট খুলে সরস্বতী প্রতিমা বিদ্যালয়ের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং তখন দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ঘরের মধ্যে একটি পুরনো সরস্বতী প্রতিমা রয়েছে। যা নিয়ে আবারও উত্তেজনা বাড়ে। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সভাপতি ড. প্রলয় নায়েক সকলকে জানান, বিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো হওয়াটা স্বাভাবিক বিষয়। তেমনই নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এখানে কেন এমন ঘটনা ঘটলো, তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছেও কেন সরস্বতী পুজো বন্ধ রাখা হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। এদিকে অভিভাবকেরা এবং এলাকার মানুষ জানিয়ে দিয়েছেন যে, ওই প্রধান শিক্ষককে তারা বিদ্যালয়ে ঢুকতেই দেবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *