‘লালন মৃত্যুতে সিআইডি তদন্ত চলবে,তবে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নয়’ জানালো হাইকোর্ট
সাধন মন্ডল,
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের তরফে বগটুই কান্ডে অভিযুক্ত লালন সেখের রহস্য মৃত্যুতে রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডির উপর ভরসা রাখলো সিঙ্গেল বেঞ্চ।তবে অভিযুক্ত সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কোন কড়া পদক্ষেপ অর্থাৎ গ্রেপ্তারি করা যাবেনা বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় সিআইডি তদন্ত চলবে। তবে এখনই সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নয়। এদিন এই নির্দেশ দিলো কলকাতা হাইকোর্ট। বগটুইকাণ্ডে অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর মন্তব্য, ‘খুব দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা, সিবিআই হেফাজতে এই মৃত্যু।
তবে এখনই কোনও সিবিআই আধিকারিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যাবে না।” পাশাপাশি এই মামলায় অন্য কোনও নির্দেশ না হওয়া পর্যন্ত তদন্তে বহাল থাকবে সিআইডি, সেই কথাও জানিয়েছেন বিচারপতি। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, যা কিছু পাওয়া গিয়েছে সেগুলি ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে। দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করতে হবে কল্যাণী এইমসে। তবে যেহেতু দেহ মাটি দিয়ে কবর দেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাই এক্ষেত্রে দেহ তুলতে স্ত্রীর অনুমতি প্রয়োজন। তাই স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে তারপর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করতে হবে। পাশাপাশি মৃতের স্ত্রীর বক্তব্য শোনা প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি। তাই তাঁকে এই মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর প্রশ্ন, “যিনি মারা গিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী অভিযোগ করলে কিএফআই আর নেওয়া হবে না? তিনি কি গুরুত্বপূর্ণ নন?” এদিকে আদালতের সওয়াল-জবাবে এদিন সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়,-‘ ঘটনার দিন সকালেও মেডিকেল পরীক্ষা হয়েছিল। সেখানে সুস্থ থাকার রিপোর্ট এসেছে’।এদিন বিচারপতি এজলাসে প্রশ্ন করেন, “মৃত্যুর পর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে? স্ত্রীকে কি দেখা করতে দেখা হয়েছে?” উত্তরে জানানো হয়, “হ্যাঁ, তখন কোন অভিযোগ করেননি।”এর পাশাপাশি গরু পাচারের তদন্তের সঙ্গে জড়িত দুই আধিকারিকের নাম জড়ানো প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, “সব অভিযোগ বানানো। অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের পর এই দুই জন অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য ও স্বরূপ দে গরুপাচার কাণ্ডের তদন্ত করছিলেন। রাজ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তদন্ত করছিলেন তাঁরা। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ।” সিবিআইয়ের দাবি, “সিআইডিকে ইচ্ছে করেই তদন্ত করতে বলা হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করলে অসুবিধা কোথায়?”সিবিআইয়ের আইনজীবীর প্রশ্ন, “কীসের এত তারা যে স্বামীর মৃতদেহ না দেখেই স্ত্রী এই অভিযোগ করলেন? রাজ্য নির্দেশ দিচ্ছে। নাহলে তাঁর স্ত্রী কখনই অফিসারদের নাম জানতে পারেন না।”অন্যদিকে রাজ্যের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, “সিবিআই কেন এই মামলা করবে? গ্রহণযোগ্য কীভাবে? ওই অফিসাররা স্বয়ং আসবেন আদালতে। কেন অন্য তদন্তকারী সংস্থাকে দেওয়া হবে? এফআইআর খারিজের আবেদন নিয়ে আসেনি সিবিআই। কয়লা বা ভোটপরবর্তী হিংসা মামলা আদালতের নজরদারি চলছে। সেটা কীভাবে প্রভাবিত হবে?” এর মাঝেই সিআইডি তদন্ত চলবে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ।তবে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কোন কড়া পদক্ষেপ অর্থাৎ গ্রেপ্তারি করা যাবেনা বলেও জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।