সন্ত্রাসীদের হামলায় জখম সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম মারা গেছেন
বাংলাদেশ করেসপন্ডেন্ট।। জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত সাংবাদিক মোঃ গোলাম রাব্বানী নাদিম মারা গেছেন। ১৫ জুন বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাদিমের ভাই সাংবাদিক এমদাদুল হক লালন। নাদিম উপজেলার নিলাখিয়া ইউনিয়নের গোমের চর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে।
সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম অনলাইন পোর্টাল ‘বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম’র জামালপুর জেলা প্রতিনিধি এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘একাত্তর টিভি’ এবং ‘দৈনিক মানবজমিন’র বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন।
নিহত সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের পরিবার সূত্রে গেছে, গত ১৪ জুন বুধবার রাতে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন নাদিম। পথিমধ্যে রাত ১০টার দিকে সরকারি কলেজ মোড় এলাকায় তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে ১০/১২ জন সন্ত্রাসী দেশিয় বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে নাদিমকে। এক পর্যায়ে নাদিমকে অজ্ঞান অবস্থায় নির্জনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা নাদিমকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা আশংকাজনক থাকায় সেখান থেকে জামালপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেও অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নাদিম।
নিহত সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর নারী কেলেঙ্কারী ও অনিয়ম- দুর্নীতি সংক্রান্ত নিউজ প্রকাশ করায় চেয়ারম্যানের লোকজন নাদিমের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। স্বামী নাদিম হত্যার সঙ্গে জড়িত মাহমুদুল আলম বাবুসহ তার সহযোগিদের ফাঁসির দাবি জানান স্ত্রী মনিরা বেগম। তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু সম্প্রতি নাদিমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এ মামলা গত ১৪ জুন বুধবার খারিজ হওয়ার পর চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু ক্ষিপ্ত হন এবং লোকজন দিয়ে নাদিমের ওপর হামলা করেন।
জানতে চাইলে জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, নিহত সাংবাদিকের ওপর হামলাকারীদের সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশের পাঁচটি দল মাঠে কাজ করছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের আটক করা হবে।
সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম নিহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জামালপুর প্রেসক্লাব ও জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন। অবিলম্বে সাংবাদিক নাদিম হত্যাকারীদের আটক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।