একশো দিনের প্রকল্প নিয়ে হাইকোর্টের রায় কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র, চলতি সপ্তাহে শুনানি? 

Spread the love

 একশো দিনের প্রকল্প নিয়ে হাইকোর্টের রায় কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র, চলতি সপ্তাহে শুনানি? 

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

ফের মামলার বেড়াজালে ১০০ দিনের প্রকল্পে গরিবদের নায্য পাওনার অধিকার। ১ অগাস্ট থেকে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ শুরু করতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এবার এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র সরকার। চলতি সপ্তাহেই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্যকে এই প্রকল্পের বকেয়া টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না বলে অভিযোগ তোলে রাজ্য সরকার এবং শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রের অভিযোগ, -‘এই প্রকল্পে রাজ্যে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে ওই টাকা অন্যদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। তাই তারা টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে’।এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়। মামলা হাইকোর্টে এখনও বিচারাধীন। গত জুন মাসে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায় দাসের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যে বন্ধ থাকা ১০০ দিনের প্রকল্প চালু করতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়। ‘কোনও কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে অনন্তকালের জন্য ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া যায় না’ বলে মন্তব্য করেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। এবং ১ আগস্ট থেকে রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের  প্রকল্প চালু করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তবে দুর্নীতি রুখতে রাজ্য সরকারকে যে কোনও শর্ত কেন্দ্র দিতে পারবে বলেও জানায় কলকাতা হাইকোর্ট।এই প্রকল্প চালু হওয়ার পরে আবারও যাতে সেই ধরনের কোনও অনিয়ম না হয় সেদিকে সতর্কতার সঙ্গে নজর রাখতে হবে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে। স্পষ্ট নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই সংক্রান্ত সমস্ত অভিযোগ ২০২২ সালের আগের। সেই সব নিয়ে আপনারা যা খুশি পদক্ষেপ করুন। কিন্তু এখন প্রকল্পের কাজ চালু করা হোক। জনস্বার্থে এই কাজ  চালু হওয়া দরকার।’উল্লেখ্য, হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে কেন্দ্র অভিযোগ করে, -‘রাজ্যে এই দুর্নীতি তদন্তে আসা কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্ট অনুযায়ী হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, মালদহ এবং দার্জিলিং- এই চার জেলায় ১০০ দিনের প্রকল্পের  কাজে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে’। ৫০ কোটি টাকারও বেশি দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তারপরই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি যে ৪ জেলায় দুর্নীতি হয়েছে, সেই জেলাগুলোকে বাদ দিয়ে বাকি অন্যান্য জেলায় প্রকল্পের কাজ শুরু করার কথা বলেন। রাজ্যের উচ্চ আদালতের যুক্তি রয়েছে , -‘দুর্নীতি নিয়ে আদালত কোনও কথা বলতে চায় না। কিন্তু যাঁরা কাজ পাচ্ছেন না বা কাজ করেও বকেয়া টাকা পাচ্ছেন না, তাঁদের কেন ভুগতে হবে? ‘ তাই জনস্বার্থে এই প্রকল্পের কাজ ১ আগস্ট থেকে শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কেন্দ্রীয় সরকার।বিগত ৩ বছর ধরে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে সরব হয়েচে তৃণমূল। বার বার বঞ্চনার অভিযোগও তোলা হয়েছে। ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লির রাজপথে প্রতিবাদও জানিয়েছেন তৃণমূলের সাংসদরা। কিন্তু তারপরেও মেলেনি বকেয়া টাকা। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ২০২২ সাল থেকে বাংলার ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে মোদি সরকার। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের বকেয়া টাকা নিয়ে একাধিকবার সোচ্চার হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বকেয়া প্রায় ৪৪ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। হাইকোর্ট জানিয়েছিল, বরাদ্দ টাকার খরচের হিসেবে দেখার ক্ষমতা কেন্দ্রের রয়েছে। কেন্দ্র সেটা করুক। কিন্তু প্রকল্প বন্ধ করা যাবে না। চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানি হতে পারে সুপ্রিম কোর্টে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *