ওবিসি শংসাপত্র মামলায় ‘ভূল’ স্বীকার করলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব
বৈদূর্য ঘোষাল ,
‘রাজ্যের উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হল?’গত বুধবার ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলায় হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়লেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। বিচারপতিদের প্রশ্নবাণের সামনে পড়ে ‘ভুল’ স্বীকার করলেন তিনি। আদালতকে আশ্বস্ত করে মুখ্যসচিব বলেন, ”ভবিষ্যতে আর হবে না!” গত বুধবার ওবিসি সংক্রান্ত মামলায় ভার্চুয়াল হাজিরা দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। কলকাতা হাইকোর্টে ভার্চুয়াল হাজিরা দেন তিনি। ওবিসি সংক্রান্ত মামলায় ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করেনি রাজ্য সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অবমাননার মামলা গ্রহণ করে এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে ভার্চুয়াল হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।এরপরেই ওইদিন কলকাতা হাইকোর্টে ভার্চুয়ালি হাজিরা দিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। গত বুধবার এই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট জানায়, ‘২০১০ সালের আগে কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি।’ এক্ষেত্রে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, ‘আদালত অবমাননার মামলায় আপনাকে ডেকে পাঠাতে আমাদের খারাপ লাগে, কিন্তু যদি আমাদের নির্দেশ না মানা হয় তাহলে আমাদের কিছু করার থাকে না।’ এই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে। আদালত আগে বলেছিল, ২০১০ সালের আগের ওবিসি সার্টিফিকেট প্রাপকরা আদালতের নির্দেশের আওতায় পড়বেন না। তাহলে আদালত এহেন নির্দেশ দেওয়ার পরেও সেই নির্দেশ না মেনে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হচ্ছে। এটা কিভাবে সম্ভব? মুখ্য সচিবকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি চক্রবর্তী। শুধু তাই নয়, মুখ্যসচিব হিসাবে আদালতের নির্দেশ সম্পর্কে অন্য সচিবদের অবগত করেছেন কিনা, তাও জানতে চান বিচারপতি মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। দীর্ঘক্ষণ এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়। শুনানিতে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মুখ্যসচিব পন্থকে।মুখ্যসচিবকে বিচারপতি চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘আপনার নির্দেশ যদি অন্যান্য সচিবরা না মানেন, তাহলে চলবে কি করে? যাঁরা আপনার নির্দেশ অমান্য করেছেন তাঁদের জিজ্ঞাসা করুন যে তাঁরা এরকম কেন করেছেন?’ বিচারপতি মান্থাও ওইদিন মুখ্যসচিবকে এই প্রশ্ন করেন। একের পর এক প্রশ্নবাণে কার্যত চরম অস্বস্তির মুখে পড়েন মুখ্যসচিব। ওবিসি সার্টিফিকেট সংক্রান্ত নির্দেশ দেওয়ার পরেও সেই নির্দেশ না মেনে রাজ্যের একাধিক দফতর, এমনকী বিচার বিভাগেও নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। আর এই অভিযোগেই সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়।