কসবা ল’কলেজ কান্ডে চার্জশিট দাখিল আলিপুর আদালতে
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
শনিবার কসবা ল’কলেজে গণধর্ষণ কাণ্ডে চার্জশিট পেশ হয়েছে । ৫৮ দিনের মাথায় ধর্ষণকাণ্ডে চার্জশিট পেশ আলিপুর আদালতে।। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল মনোজিৎ সহ চারজনকে। এবার সকলের বিরুদ্ধেই চার্জশিট পেশ আদালতে।তাতে মূল অভিযোগ হিসেবে নাম রয়েছে মনোজিৎ মিশ্র-র। এছাড়া প্রমিত মুখোপাধ্যায়, জেব আহমেদ এবং কলেজের নিরাপত্তারক্ষী পিনাকি বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে অভিযুক্ত হিসেবে। প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ছাড়াও তথ্য-প্রযুক্তি আইনে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা চলছে বলে জানা গেছে । এর মধ্যে মূল অভিযুক্ত হিসাবে যার নাম উঠে এসেছিল তাঁর বিরুদ্ধে ৯টি ধারা, বাকি দু’জনের বিরুদ্ধে ৬টি ধারা, বাকি আরও একজনের বিরুদ্ধে ৭টি ধারা দিয়ে আদালতে চার্জশিট জমা দিল পুলিশ। গণধর্ষণ ছাড়াও জোর করে আটকে রাখা, বিপজ্জনকভাবে গুরুতর আঘাত করা, প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি, অপহরণ এবং একই উদ্দেশ্যে একাধিক ব্যক্তি অপরাধ সংগঠিত করার মতো অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারা প্রয়োগ করেছে পুলিশ।গত ২৫ জুন কসবার ওই ল কলেজে গণধর্ষণের শিকার হন প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী। এ ঘটনাতে ফের একবার তোলপাড় হয় গোটা শহর। প্রশ্ন উঠে যায় নারী নিরাপত্তা নিয়ে। ২৬ জুন গণধর্ষণের মামলা রুজু হয় কসবা থানায়। মূল অভিযুক্ত কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র ও অস্থায়ী কর্মী বলে জানা যায়। মূল অভিযুক্তকে সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছিল বাকি দু’জনের বিরুদ্ধে। তিনজনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার করা হয় কলেজের এক নিরাপত্তারক্ষীকেও।৫৮ দিনের মাথায় ৬৫০ পাতার চার্জশিট পেশ করেছে পুলিশ। ৮০ জনেরও বেশি সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। গণধর্ষণ, আটকে রাখা, অপহরণ, প্রাণনাশের হুমকি, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারায় মামলা করা হয়েছে। মোবাইলে অপরাধের ভিডিও তুলে মোছার চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।এই চার্জশিট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । এই কারণে যে, বিএনএ-এর যেসব ধারা দেওয়া হয়েছে তাতে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্তকারী সংস্থাকে চার্জশিট জমা দিতে হয়। নাহলে, পরবর্তী সময়ে অভিযুক্তরা জামিনের জন্য আবেদন করতে পারেন। চলতি সপ্তাহেই নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় আলিপুর জেলা জজের কোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন। যার বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী। তখন বলা হয়, যেহেতু চলতি সপ্তাহে চার্জশিট দেওয়া হতে পারে, সেই কারণে এই জামিনের আবেদন যেন পিছিয়ে দেওয়া হয়। এরফলে, ৬০ দিনের মাথায় চার্জশিট না দেওয়া গেলে অভিযুক্তদের জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। গত ২৬ জুনের পর থেকে গ্রেফতারি, বয়ান সংগ্রহ , সেই বয়ানের পরে তাদের কলেজে নিয়ে গিয়ে কেসের পুনর্নির্মাণ করা। এছাড়া অভিযুক্তদের মোবাইল ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো…এই সমস্ত কিছু শেষ করা হয়। ৮০ জনের সাক্ষী নেওয়া হয়। তারপরেই এদিন ৬৫০ পাতার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।এদিন দুপুর ২টোর কিছু পর আইও চার্জশিট আনেন। তার কিছুক্ষণ পরে আলিপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে নিয়ে যান। মিনিট ১৫ সেই চার্জশিট খতিয়ে দেখেন বিচারক। তারপর তিনি সেটি গ্রহণ করেন। অর্থাৎ, আদালতগ্রাহ্য হয় চার্জশিট।এই চার অভিযুক্তদের কাউকে এদিন সশরীরে আদালতে আনা হয়নি। গত শুক্রবার তাদের আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়েছিল। তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।