মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,
মকরসংক্রান্তি উপলক্ষে রাজ্যের সর্ববৃহৎ ধার্মিক মেলায় গাইডলাইন চেয়ে মামলার শুনানি হতে পারে আজ।কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণন এর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। গত সোমবারই সমাজকর্মী অজয় দে করোনা আবহে এবারের গঙ্গাসাগর মেলায় রাজ্য সরকারের গাইডলাইন সহ দক্ষিণ ২৪ পরগণার গঙ্গাসাগর এবং কলকাতার বাবুঘাটে করোনা স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ প্রয়োগ চেয়েছে।কেননা শুধু এই রাজ্যেই নয় সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে সাধুসন্ত সহ লাখো লাখো ধর্মপ্রাণদের সমাগম ঘটে এই সাগরমেলায়।সাগরদ্বীপ – কপিলমুনির আশ্রম সহ মেলা চত্বরে প্রচুর সমাগম ঘটে ভক্তদের। ভারতবর্ষে কুম্ভমেলার পরেই দ্বিতীয় বৃহত্তম মকরসংক্রান্তি মেলা হিসাবে পরিচিত এই গঙ্গাসাগর মেলা।মামলাকারী অজয় দে ইতিমধ্যে দুর্গাপূজা – কালিপুজো – জগদ্ধাত্রী পুজো – ছটপুজোয় করোনা স্বাস্থ্যবিধির কঠোর অবস্থান চেয়ে মামলা করেছিলেন। যার সূত্র ধরে কলকাতা হাইকোর্ট বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজাতে ‘নো এন্ট্রি’ জোন পর্যন্ত গড়ার নির্দেশ দিয়েছিল। মামলাকারীর দাবি – ‘ মারণ ভাইরাস করোনার প্রকোপ এখনও কমেনি, উল্টে ইংল্যান্ডে করোনার সবথেকে মারাত্মক ভাইরাস মিলেছে।যা ভারতবর্ষে উপস্থিতির জানান দিয়েছে।তাই সার্বিক ভাবে জনসমাগম এড়িয়ে যাওয়াটায় শ্রেয়’। উল্লেখ্য, বর্ষবরণ উৎসবেও কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য পুলিশ প্রশাসন কে করোনা স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ প্রয়োগে নির্দেশ জারি করেছিল।তাতে আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন – ‘গঙ্গাসাগর মেলা নিয়েও হাইকোর্ট রাজ্য কে গাইডলাইন বেঁধে দিতে পারে’।যদিও রাজ্য সুপ্রিম কোর্ট অবধি কুম্ভমেলা কে উদাহরণ টেনে আপিল করার প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি দক্ষিণ ২৪ পরগণার সাগরদ্বীপ – কপিলমুনির আশ্রমে শুরু হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা।জেলা প্রশাসন বিকল্প হিসাবে ভার্চুয়াল প্রদর্শনীতে ইতিমধ্যে জোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। অপরদিকে রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর দায়ের করা কাঁথি পুর প্রশাসক মামলার সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম সিনহার এজলাসে শুনানি চলে। সেখানে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ছিল -‘ যে কোন নাগরিককেই পুর প্রশাসক পদে বসাতে পারে রাজ্য সরকার ‘। এদিন কাঁথির বিদায়ী পুর প্রশাসক সৌমেন্দু অধিকারীর পক্ষে সওয়াল করেন বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি এদিন সওয়াল-জবাবে জানান – ‘ নির্বাচিত কাউন্সিলার ছাড়া পুর প্রশাসক পদে অন্য কাউকে বসাতে পারেনা রাজ্য সরকার ‘। এর পাল্টা জবাবে রাজ্য সরকারের পক্ষে এডভোকেট জেনারেল হাইকোর্ট সহ সুপ্রিম কোর্টের বেশকিছু অর্ডারকপি দেখিয়ে দাবি করেন -‘ রাজ্য যে কোন নাগরিককে পুর প্রশাসক পদে বসাতে পারে, সেজন্য সংশ্লিষ্ট পুরসভার কাউন্সিলার বাধ্যতামূলক নয়’। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম সিনহার পর্যবেক্ষণে উঠে আসে ‘যে কোন নাগরিককেই পুর প্রশাসক পদে বসাতে পারে রাজ্য সরকার ‘। যদিও আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুরে ফের শুনানি হওয়ার কথা কাঁথির পুর প্রশাসক মন্ডলী নিয়োগ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি কে চ্যালেঞ্জ করা মামলাটির।এইদিন এই পর্যবেক্ষণের কোন আইনী জবাব থাকলে জানাতে পারেন মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য মহাশয়। গত বছর ১৯ মে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রাজ্য সরকার কাঁথির প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারী কে পুর প্রশাসক পদে বসায়।সম্প্রতি রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী দলবদল করে বিজেপিতে যাওয়ায় গত ৩০ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারী করে ওই পদ থেকে অব্যাহতি দেয় রাজ্য সরকার। এই বিজ্ঞপ্তি কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দাখিল করেন সৌমেন্দু। এরেই মধ্যে কাঁথির প্রাক্তন পুর প্রশাসক সৌমেন্দু অধিকারী দলবদল করে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন।