জঙ্গলমহলে কুর্মিদের রেল রোকো ও রাস্তা অবরোধে রাজ্য কে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বললো ডিভিশন বেঞ্চ 

Spread the love

জঙ্গলমহলে কুর্মিদের রেল রোকো ও রাস্তা অবরোধে রাজ্য কে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বললো ডিভিশন বেঞ্চ 

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কুর্মিদের রেল রোকো ও রাস্তা অভিযানে রাজ্যকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিল । কলকাতা হাইকোর্টের   বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি স্মিতা দাস দের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, -‘এই ব্যাপারে ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মাসে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের যে নির্দেশ, সেই অনুযায়ী নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।’  আদিবাসী তালিকাভুক্ত করার দাবি জানিয়ে ফের একবার আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করেছে কুড়মিরা। পুজোর মুখে অনির্দিষ্টকালীন রেল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি নিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু কর্মসূচির আগেই চাপে সংগঠন। বৃহস্পতিবার, আদিবাসী কুড়মি সমাজের এই রেল ও সড়ক অবরোধকে অসাংবিধানিক বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দের ডিভিশন বেঞ্চ।মামলাকারীর অভিযোগ, -‘শনিবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরে সহ আশপাশের এলাকায় একইভাবে অবরোধের ডাক দিয়েছে কুর্মি সম্প্রদায়।  এসটি তালিকাভুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভে নামছেন কুর্মি সম্প্রদায়।গতবারে প্রতিবেশী তিন রাজ্যেও এই অবরোধ চলে। এই অভিযানের জেরে প্রতিদিন রেলের ২১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।২০২২ ও ২০২৩ সালে একইভাবে অবরোধ হয়। বিপুল ক্ষতি হয় রেলের। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে লাগাতার অবরোধ ডাক। রাজ্যের উচ্চ  আদালতের নির্দেশ, -‘এই অবরোধ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে’। ২০২৩ সালে ২৯ সেপ্টেম্বর  এই কুর্মি সমাজ গোটা কলকাতা প্রায় অচল করে দেয়। প্রসঙ্গত, দুর্গাপুজোর মুখে ফের মাথা তুলছে কুড়মি সমাজ। বাংলা, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্তব্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কুর্মি সমাজ।২০ সেপ্টেম্বর রেল ও রাস্তা অবরোধের কর্মসূচি নিয়েছেন তাঁরা। এর আগে ২০২৩ সালেও একই ভাবে টানা আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন তাঁরা। সারনা ধর্মের স্বীকৃতি ও তফসিলি উপজাতিভুক্ত হওয়ার দাবিতে পুরুলিয়া, খড়গপুরের খেমাশুলি স্টেশনে অবরোধ চালাচ্ছিলেন কুড়মিরা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল জাতীয় সড়কও। এক আইনজীবীর প্রশ্নের উত্তরে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, -‘অবরোধ গণতান্ত্রিক অধিকার নয়’।কুড়মিদের ২০ তারিখের আন্দোলনের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই এই নির্দেশ  দিয়েছে আদালত। জানা গিয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশ স্বত্ত্বেও আগামি ২০ তারিখ এই কর্মসূচি থেকে পিছু হঠছে না কুড়মিরা। অবরোধ সামলানোর জন্য রেল, রাজ্য পুলিশ ও জনপ্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ২০ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে এই অনির্দিষ্টকালীন রেল টেকা ও ডহর ছেঁকা আন্দোলনে নামছেন তাঁরা। কুড়মি সমাজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলা, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা মিলিয়ে তিন রাজ্যের রেল ও সড়ক অবরোধ হবে ১০০টি পয়েন্টে । তার মধ্যে জঙ্গলমহলের পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম-মেদিনীপুর এলাকায় রেল ও সড়ক অবরোধের পয়েন্ট রয়েছে প্রায় ৪৫ টি। পুরুলিয়াতেই সবচেয়ে বেশি ৪০টি। এই কর্মসূচি তাঁরা সফল করার জন্য বিভিন্ন স্টেশনে স্টেশন ম্যানেজারকে লিখিত আকারে জানিয়েছেন। আদিবাসী তালিকাভুক্তের দাবিতে আদিবাসী কুড়মি সমাজ প্রায় ২০১৫-১৬ আর্থিক বছর থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। পুজোর মুখে সড়ক অবরোধের কর্মসূচি চলছে বেশ কয়েকবছর ধরে। ২০২২ সালে টানা ৫ দিন রেল অবরোধ হয়েছিল। সেই সঙ্গে ৩ দিন চলেছিল সড়ক অবরোধও। ২০২৩-এ কলকাতা হাইকোর্ট এই আন্দোলনকে অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক বলায় তাঁরা বাধ্য হন আন্দোলন প্রত্যাহার করতে।এবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আগেভাগেই জোর করে অবরোধ করাটা কে অসাংবিধানিক বলে জানিয়েছে। সেইসাথে জনজীবন সচল রাখতে পুলিশ প্রশাসন কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *