তিতুমীরের যুদ্ধক্ষেত্র নারকেলবেড়িয়া ও জন্মভূমি চাঁদপুর গ্রাম দুটিকে হেরিটেজ ভিলেজ হিসেবে স্বীকৃতির দাবি
রাজকুমার দাস
বসিরহাট: ১৯ নভেম্বর ছিল মুক্তি সংগ্রামের প্রথম শহিদ তিতুমীরের আত্মোৎসর্গ দিবস। তিতুমীরের শাহাদত ভূমি উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার নারকেলবেড়িয়াতে দিনটি উৎযাপিত হয়েগেল১৯শে নভেম্বর। আয়োজনে শহীদ তিতুমীর মিশন। বলে রাখা ভালো ১৮৩১ সালের ১৯ নভেম্বর অত্যাচারী নীলকর ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে এক অসম লড়াইয়ে শাহাদাত বরণ করেন সৈয়দ মীর নিসার আলী ওরফে তিতুমীর। ধ্বংস হয় তার হাতে নির্মিত ঐতিহাসিক বাঁশের কেল্লা। বুধবার বিকেলে তিতুমীরে স্মরণে এক মিনিট নীরবতার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানেরশুভ সূচনা হয়। ১৯ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ উইক বা বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহের সূচনায় এই দিনটি উদযাপনে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের উপস্থিতি ঘটে। তিতুমীরের যুদ্ধক্ষেত্র নারকেলবেড়িয়া ও জন্মভূমি চাঁদপুর গ্রাম দুটিকে হেরিটেজ ভিলেজ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিতে একটি আলোচনা সভা হয়। বক্তব্য রাখেন পিপলস্ গ্রীণ সোসাইটির সম্পাদক শ্যামল ঘোষ, তেঁতুলিয়া শহীদ নুরুল ইসলাম মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক অরুণ কুমার পাল, সংগঠনিক যুগ্ম সম্পাদক প্রবীর কুমার রায় ও উর্মি চক্রবর্তী, বিশিষ্ট তথ্য চিত্র পরিচালক রূপক প্রামাণিক, আটঘরা সংহতি কেন্দ্রের সম্পাদক পলাশ বর্ধন, কেওটশা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোবাস্বার হোসেন, কবি ও শিক্ষক অয়ন বিশ্বাস, মোর্তজা হোসেন, কবি রমজান আলী, মন্টু মন্ডল প্রমুখ। শহিদ তিতুমীর মিশনের সম্পাদক রবিউল হক বলেন শহিদ তিতুমীরের ইতিহাসকে অক্ষত রাখতে এবং তার স্মরণে আমাদের দাবি জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ মাইনোরিটি কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছিল। সম্প্রতি চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এ বিষয়ে অবগত করলে সরকারি তরফে এই এলাকাটিতে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়ে পাঁচ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ঘোষণার কথা জানা গেলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।রবিউল হকের দাবি, এই সংক্রান্ত সরকারি কোন নির্দেশনা আমাদের কাছে পৌঁছয়নি। এ বিষয়ে এদিনের অনুষ্ঠান সভাপতি শ্যামল ঘোষ বলেন, আরটিআই করে বিষয়টি জানা দরকার। পাশাপাশি বাঁশের কেল্লা খ্যাত তিতুমীরের শাহাদত ভূমি নারকেলবেড়িয়া ও জন্মক্ষেত্র হায়দারপুর চাঁদপুর গ্রাম দুটিকে হেরিটেজ ভিলেজ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করার কথা তিনি জানান। পাশপাশি স্কুল, কলেজ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে এই আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান করেন। অন্য বক্তারাও এ বিষয়ে সহমত পোষণ করেন।ইতিমধ্যে রাজকুমার দাস পরিচালিত তথ্যচিত্র”বীর তিতুমীর”-২০০৭সালে তৈরী হয়,যা দেশ বিদেশের ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ব্যাপক সাড়া ফেলে।সেই ছবিতে পরিচালক তিতুমীর এর জীবন শৈলী এবং তার কাজের দিক তুলে ধরেছিলেন।
তিতুমীর মানুষের জন্য যা অবদান রেখে গেছে সেই কথা মাথায় রেখে তার দুই গ্রাম অর্থাক যুদ্ধক্ষেত্র এবং জন্ম ভূমি কে হেরিটেজ ভিলেজ হিসাবে ঘোষণা করা হোক এটা সবার একান্ত চাহিদা,সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ হলে তা আগামী দিনে পর্যটকদের কাছে এক নতুন দিশা দেখাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
