নিজের হাতেই দুর্গা মূর্তি তৈরি করল ক্ষুদে শুচিব্রত
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
একটা কথা খুব চালু আছে - সন্তানের উপর পরিবারের প্রভাব থাকে খুব। মাঝে মাঝে গোবরে পদ্মফুল ফুটলেও কথাটা যে সত্যি সেটা আবার প্রমাণ করল গুসকরা পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বছর বারোর শুচিব্রত শ্যাম।
আদি বাড়ি গলসীর চান্না গ্রামে হলেও তার বেড়ে ওঠা গুসকরায়। জেঠু সুব্রত শ্যাম পুরোপুরি সাংস্কৃতিক জগতের সুপরিচিত মুখ। বাবা দেবব্রত শ্যামেরও সাংস্কৃতিক জগতে আলাদা পরিচিতি আছে। দিদি শুচিস্মিতার মত সেও পেয়েছে কালচারাল পরিবারের কালচারের প্রভাব। ছোট থেকেই আপন খেয়ালে সে মত্ত হয়ে ওঠে বিভিন্ন ধরনের মূর্তি তৈরি করতে। অবশ্য প্রত্যেক সময়ে সে পাশে পেয়েছে দিদিকে। সঙ্গে পরিবারের সবার উৎসাহ।
করোনা জনিত কারণে গত দু'বছর ধরে আতঙ্ককে সঙ্গী করে হয়েছে দুর্গাপুজো। এবার অবশ্য সেই আতঙ্ক কার্যত অতটা নাই। সেই সুযোগটাই ভালভাবেই ব্যবহার করেছে ক্ষুদে শুচিব্রত। পাড়ার দুর্গাতলা থেকে মাটি এনে বাড়িতেই তৈরি করে ফেলেছে ছোট্ট দুর্গা মূর্তি। যদিও সেখানে দুর্গার সন্তানরা নাই। মূর্তির মধ্যে অসাধারণ সৌন্দর্যের খোঁজ না পাওয়া গেলেও পাওয়া যাবে ছোট্ট ছেলের ভক্তির স্পর্শ। শহরের বিভিন্ন মণ্ডপে আলোর রোশনাই বা দৃষ্টি নন্দন সজ্জা থাকলেও নিজের সাধ্যমতো কাগজ দিয়ে তৈরি করেছে শিকল। ভাড়া বাড়ির অসম্পূর্ণ চিলে কোঠায় তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। হয়তো তাতে একটা বাল্ব জ্বলবে। তাতেই তার আনন্দের সীমা নাই।
ভাইয়ের সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই লজ্জায় রাঙা হয়ে ওঠে স্বভাব লাজুক শুচিস্মিতা। অবশেষে তার ছোট্ট মন্তব্য - ভাই আমার গর্ব।
দেবব্রত বাবু বললেন - আমার সন্তানকে কোনো কাজেই বাধা দিইনা। সে তার জেঠুর মতই সৃষ্টির আনন্দে মেতে আছে। আমরাও চাই সে ঐভাবেই নিজের মত করে বড় হোক। ওর দিদিও ঠিক একইভাবেই বড় হচ্ছে। তাছাড়া ও বরাবরের মেধাবী ছাত্র। স্বাভাবিক ভাবেই নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন।
পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে মূর্তি তৈরি করলেও বিষয়টি সামনে আসে গত বছর। তবে যেটুকু হয়েছে সবটুকুই তার নিজের চেষ্টায়।