নির্বাচনের এত আগে থেকে কেন বুথ লেভেল এজেন্টদের নিয়ে তথ্য সংগ্রহ? হাইকোর্টের দারস্থ তৃণমূল কংগ্রেস
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলো তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচনের এক বছর আগেই বুথ লেভেল এজেন্টে তথ্য চাইছে কমিশন। রাজ্যের শাসক দলের দাবি, -‘এখন এই তথ্য চাওয়াটা নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না’।নির্বাচনের এত আগে কেন বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ)-দের নাম চাইছে নির্বাচন কমিশন? কেন সময়সীমা বেঁধে দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে তড়িঘড়ি নাম দিতে বলা হচ্ছে? এই প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ তৃণমূল। গত মাসে রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলের কাছে বিএলএ-দের নাম জমা দিতে বলে কমিশন। তাদের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোমবার।রাজ্যের উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনার সদরের জেলা সভাপতি তথা দলের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে ওঠে সেই মামলা। এদিন তৃণমূলের আবেদন শুনে বিচারপতি বলেন,-”শুধু কি আপনারাই এফেক্টেড হচ্ছেন না সমস্ত রাজনৈতিক দল? আপনারা একা কেন এসেছেন?” প্রশ্ন শুনে তৃণমূল কংগ্রেসের আইনজীবী বলেন, “কমিশন জানিয়ে দিয়েছে এই রাজ্যে SIR হবে। অন্য দল হয়ত মেনে নিয়েছে, কিন্তু আমরা এই বিষয়টা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করছি’। দ্রুত শুনানির আবেদন জানানো হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। তবে সেই আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে আদালত। চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে। শাসক দলের দাবি, -‘ নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট (SIR) চালু হবে’। তার মধ্যেই বুথ এজেন্টদের নাম-সহ খুঁটিনাটি তথ্য চাওয়া, একাধিক প্রশ্ন তুলছে। যা নিয়ে আপত্তি তুলেছে তৃণমূল। শাসক দলের অভিযোগ, -‘ এই ধরনের তথ্য তলব করার এক্তিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই’। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এই মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন জানানো হলেও, আদালত আপাতত সেই আর্জি খারিজ করে দেয়। বিচারপতি জানিয়েছেন, নির্ধারিত নিয়ম মেনেই মামলার শুনানি হবে। প্রসঙ্গত, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগেই বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন বা এসআইআর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলায়। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে বুথ স্তরের এজেন্টদের নাম চাওয়া হচ্ছে। আর তাতেই আপত্তি তৃণমূলের। সম্প্রতি চার আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া নিয়ে দু’পক্ষের ( নবান্ন – কমিশন) মধ্যে মতবিরোধ চরমে পৌঁছয়। কমিশনের তরফে তাঁদের সাসপেন্ড এবং ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও রাজ্য শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে অব্যাহতি দেয় তাঁদের। নইলে ‘সুদক্ষ’, ‘কর্মঠ’ আধিকারিকদের মনোবল ভেঙে যাবে বলে যুক্তি দেয় রাজ্য। এরপর দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয় মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে। তলবে সাড়া দিয়ে কমিশনের দপ্তরে যান তিনি। সূত্রের খবর, সেখানে ‘এক্তিয়ার’ নিয়ে দু’পক্ষের কথাবার্তা হয়। কমিশন ‘এক্তিয়ার’ বহির্ভূত কোনও কাজ করছে না বলেই জানিয়ে দেয়। সূত্রের খবর, আধিকারিকদের সাসপেনশন সংক্রান্ত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত সময় চেয়ে নেন মুখ্যসচিব। তারই মাঝে বিএলএদের তথ্য তলব ইস্যুতে সংঘাত যেন আরও প্রকট হয়েছে। নবান্নের দাবি,-‘ কমিশনের লাগাতার হস্তক্ষেপের ফলে প্রশাসনিক কাজকর্ম চালাতে সমস্যা হচ্ছে’। চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে।