মোল্লা জসিমউদ্দিন , আমিরুল ইসলাম,
মঙ্গলকোটের আনাচে-কানাচেতে পড়ে আছে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। তাতে নবতম সংযোজন হলো মঙ্গলকোটের নিগন এলাকা। শনিবার সকাল থেকে স্থানীয় এক পুকুরে খনন করতে গিয়ে গভীরে মিলে প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ইমারতি দেখতে ভীড় জমান স্থানীয়রা।তাদের দাবি – “এই পুকুর টি দুশো বছরের পুরাতন, ছোট থেকেই শুনে আসছি এখানে নাকি রাজাদের রাজপ্রাসাদ সহ বাঁধানো পুকুর ঘাট ছিল”। বিষয়টি জেনে মঙ্গলকোট বিডিও জগদীশ চন্দ্র বারুই ওই পুকুর নিয়ে বিস্তারিত খোজখবর নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের নিগন গ্রামে ‘গোপাল দিঘি’ রয়েছে মাঠের ধারে। বেশ কয়েকজন মালিকানা রয়েছে এই পুকুরের।গত দশ দিন ধরে ওই পুকুরের খনন কাজ চলছে।আজ সকালে হঠাৎ নিগন গ্রামে গুজব ছড়ায়। গোপাল দিঘি খনন করতে করতে রাজার বাড়ি পাওয়া গেছে।এই খবর ছড়াতেই পুকুরপাড়ে ব্যাপক ভিড় জমে যায়।এলাকার বহু মানুষ পুকুর দেখতে যান ।নিগন গ্রামের বাসিন্দা প্রফুল্ল ঘোষ জানান, “সকালে আমিও খবর পাই যে গোপাল দিঘিতে রাজার বাড়ি পাওয়া গেছে। তড়িঘড়ি ছুটে যাই দেখতে। কিন্তু না ওটা কোন রাজার বাড়ি নয় ওই পুকুরটি বহু পুরাতন পুকুর। ওখান থেকে যে ১০ ইঞ্চি থেকে ১৫ ইঞ্চি যে দেওয়াল দেখা যাচ্ছে এটি বাঁধানো ঘাট ছিল ।আমি ছোটবেলায় দেখেছিলাম যখন স্কুলে যেতাম। দীর্ঘদিন পুকুরটি সংস্কার হয়নি তাই মাটিচাপা পড়ে গিয়েছিল। বর্তমানে পুকুরটি সংস্কার হচ্ছে । তাই বাঁধানো ঘাটের ভগ্ন অবশেষে দেখা যাচ্ছে। এটা নিয়ে কোনো গুজব ছাড়ানোর কিছু নেই। আজ থেকে প্রায় চল্লিশ বছর আগেও যখন নিগন হসপিটাল তৈরি করা হচ্ছিল। তখন বহুৎ পুরাতন বাড়ির ভগ্ন অবশেষ পাওয়া গেছিল। মানুষ আবার ভেবেছে সেরকমই কিছু পাওয়া গেছে, ওটা পুকুরের ঘাট”। সবমিলিয়ে মঙ্গলকোটের নিগন গ্রামে পুকুর খনন করতে গিয়ে রাজবাড়ী বেরিয়েছে এই খবর ছড়াতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।উল্লেখ্য, বর্ধমানের মহারাজাদের পৈতৃক ভিটা ছিল নিগন সংলগ্ন মাথরুন গ্রামে।শুধু তাই নয় মুঘল সম্রাট শাহজাহান বাদশার শিক্ষা ও দীক্ষাগুরু আব্দুল হামিদ দানেশখান্দ যিনি হামিদ বাঙ্গালী নামে পরিচিত। তাঁর সমাধিস্থল রয়েছে এই মঙ্গলকোটেই।মঙ্গলকোটের প্রয়াত প্রত্নবিদ কেশব বন্দ্যোপাধ্যায় একদা মঙ্গলকোটের প্রাচীন সভ্যতা সহ নানান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন উদ্ধারে নজির গড়েগেছেন।