মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হসপিটাল তুলে ধরল এনজিওর ভূমিকা ক্যান্সার চিকিৎসায় জাতীয় ক্যান্সার সচেতনতা দিবসে
পারিজাত মোল্লা,
কলকাতা, ৭ ই নভেম্বর, ২০২৪: জাতীয় ক্যান্সার সচেতনতা দিবস উপলক্ষ্যে মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল, কলকাতার অন্যতম সেরা স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা, একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করেছিল। এই আলোচনার বিষয় ছিল ‘আধুনিক ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের ক্যান্সারের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে এনজিও র ভূমিকা’। বিভিন্ন নামী এনজিওর প্রতিনিধি প্যানেলিস্ট হিসেবে এসেছিলেন যথাক্রমে রোটারি, ফাইট ক্যান্সার, ক্যান্সার ফাইট ফাউন্ডেশন, যাদবপুর পেনশন ফাউন্ডেশন, গৌরী বাড়ি ওয়েলফেয়ার, ক্যানকিডস এবং দিনান্তে। এই আলোচনার সঞ্চালনা করেন প্রফেসর (ডঃ) সুবীর গাঙ্গুলি, সিনিয়র কনসালটেন্ট এবং অ্যাডভাইজার, রেডিয়েশন অনকোলজি, এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যানসারকে হারিয়ে আসা মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এই বছরের জাতীয় ক্যান্সার সচেতনতা দিবসের থিম হল,’ প্রিভেনশন, দ্রুত ডিটেকশন এবং চিকিৎসা’। এর মূল অর্থ হল শুরুর দিকেই উপসর্গ দেখতে পেলেই চিকিৎসা পরিষেবার আওতায় নিয়ে আসা। অনেক সময়তেই দেখা যায় আর্থিক অক্ষমতার কারণে ক্যান্সার পরিষেবা নিতে পারেন না অনেকে। এখানে এনজিওরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন। প্রাইভেট হসপিটালের সাথে একযোগে কাজ করে অনেক মানুষকেই চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার দিকটিতে সাহায্য করতে পারেন তারা। সাধারণত চিকিৎসার খরচের দিকটি তারা সাহায্য বা ভর্তুকি দেন রোগীর চিকিৎসার স্বার্থে।
এই আলোচনায় প্রফেসর (ডঃ) সুবীর গাঙ্গুলি, বলেন,” অনেক মানুষের প্রাণ চলে যায় ক্যান্সারে। দুঃখজনক হলেও এটাই সত্যি যে এর মধ্যে অনেক মৃত্যুর কারণ হল চিকিৎসার পর্যাপ্ত সুযোগ না থাকা। অনেকের জন্য ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ সাধ্যের বাইরে, আর তাই চিকিৎসা বহন করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। একাধিক এনজিও তথা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে যাতে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের কাছে ক্যান্সারের চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। এই সংস্থাগুলো স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যে ফাঁক রয়েছে, সেগুলো পূরণ করতে পারে বিভিন্ন ভাবে, যার মধ্যে অন্যতম হল আর্থিক সাহায্য। প্রাইভেট হসপিটালের সাথে কাজ করতে গিয়ে তারা সস্তায় চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দিকটি দেখতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে বিনা পয়সায় স্ক্রিনিং বা পরীক্ষা নিরীক্ষা। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে এনজিও রা বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে ক্যান্সার নিয়ে এবং ইমোশনাল ও লজিস্টিক এর সাহায্য করে, যেমন কাউন্সেলিং। এছাড়া তাদের তরফে নিউট্রিশন নিয়ে পরামর্শ এবং যাতায়াতের দিকটিও দেখা হয়, যা বিশেষ সাহায্য হয় ক্যান্সার রোগীদের। মেডিকাতে আমরা বিভিন্ন এনজিও র সাথে ক্যান্সার নিয়ে কাজ চলেছি যাতে প্রয়োজন অনুসারে মানুষকে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। আমরা বেশ কিছু ক্ষেত্রে এনজিও র সাথে কাজ করে সফল হয়েছি এবং অনেক মানুষ উপকৃত হয়েছেন। আমরা সামনের দিনে রোগীর স্বার্থে এরকম আরো সংস্থার সাথে কাজ করতে আগ্রহী।”
ডঃ অয়নাভ দেবগুপ্ত, রিজিওনাল চিফ অপারেটিং অফিসার, মনিপাল হসপিটাল (পূর্ব), বলেন,” ক্যান্সার আমাদের সমাজের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদ। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সাথে যুক্ত প্রফেসনাল হিসেবে আমাদের মূল লক্ষ্য হল ক্যান্সার চিকিৎসা মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে রাখা এবং প্রয়োজনে মানুষ যাতে এই পরিষেবা পেতে পারে, তা নিশ্চিত করা। আমাদের খুব কষ্ট হয় দেখে যখন কোন মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যান। শুরুর থেকেই, আমরা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সাথে পার্টনারশিপ করেছি যাতে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে সহজ করা যায়। এই সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা আর্থিক বোঝা কিছুটা কমাতে সক্ষম হয়েছি এবং সামনের দিনেও আমরা এই ভাবে রোগীদের সাহায্য করার চেষ্টা করে যাব।”