সেখ সামসুদ্দিন
পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রে মেমারির নাম উজ্জ্বল করে মাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম অরিত্র পাল ও মাদ্রাসা বোর্ডে রাজ্যে একাদশ ও জেলায় প্রথম সাদিয়া বানু। ঠিক একইভাবে মেমারি ১ ব্লকের মানচিত্রে শশীনাড়া গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করল দুই দুঃস্থ পরিবারের সন্তান মাধ্যমিকে ১৬ র্যাঙ্ক করে ভ্যানরিক্সা চালকের সন্তান সোমেশ্বর দাস ঠিক একইভাবে পিতৃহীন ও ভূমিহীন অভাবী পরিবারের সন্তান সুদীপ্ত দাস উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৮২ নম্বর পেয়ে হিসাব অনুযায়ী রাজ্যে ১৮ র্যাঙ্ক করেছে। যদিও এবারে সরকারিভাবে উচ্চমাধ্যমিকের র্যাঙ্ক ঘোষণা করা হয়নি। বছর চারেক আগে দুরারোগ্য রোগে সুদীপ্তর বাবা শ্যামল দাস প্রয়াত হন। তখন থেকেই গ্রামেই থাকা ছোট্ট মুদিখানার দোকান চালিয়ে মা সান্ত্বনা দাস পরিবারের দায়িত্ব মাথায় তুলে নিয়েছেন। একইসঙ্গে ছেলেকেও পড়াশোনা করিয়ে মানুষ করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন। চাষজমি একছটাকও নেই, ঐ দোকান চালিয়েই জীবিকা নির্বাহ করে চলেছেন। সুদীপ্ত বাগিলা পূর্ণচন্দ্র স্মৃতি বিদ্যামন্দির থেকে ৯২.৫৭ শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক পাশ করে মেমারি বিদ্যাসাগর স্মৃতি বিদ্যামন্দির শাখা ২ এ ভর্তি হয়। এবারে ৪৮২ নম্বর অর্থাৎ ৯৬.৪০ শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে। ভবিষ্যতে লক্ষ্য ইঞ্জিনিয়ার হওয়া। পড়াশোনার ফাঁকে ক্রিকেট খেলতে, শ্রেয়া ঘোষালের গান শুনতে, রহস্যময় গল্প পড়তে ও মাঝেমধ্যে সিনেমা দেখতেও পছন্দ করে। তবে সবকিছুর মধ্যে নিয়মিত মেমারি বাজার থেকে দোকানের মালপত্র কিনে নিয়ে গিয়ে মাকে সাহায্য করে। লকডাউনের মধ্যে এখন দোকানেও সময় দেয়। বাড়িতে বৃদ্ধ ঠাকুরদা সুনীল দাস ও ঠাকুমা ভারতী দাস আছেন যারা নাতিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে সংসারের অভাব দূর করবে এবং তাদের মত অভাবী পরিবারের পাশে দাঁড়াবে। শশীনাড়া গ্রামবাসীরাও আজ গ্রামের এই দুই অভাবী পরিবারের মেধাবী ছাত্রকে নিয়ে গর্ববোধ করছেন।