রবীন্দ্রজন্মজয়ন্তী উদযাপনে রবীন্দ্রভারতী সোসাইটি
উত্তর কলকাতা জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্রভারতী সোসাইটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪ তম জন্মোৎসব পালন করল গত ২৫ আর ২৯শে মে সন্ধ্যায় রথীন্দ্রমঞ্চে। পূর্বনির্ধারিত পর পর দুইদিন উৎসবের ২৬ তারিখের অনুষ্ঠান স্থগিত ক’রে ২৯ তারিখে করা হয় ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে। মহা সমারোহ ও দর্শক পরিপূর্ণ রথীন্দ্রমঞ্চে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয় রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির শিল্পী কলাকুশলীদের নিবেদনে ‘চিত্রাঙ্গদা’ নৃত্যনাট্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। কবিগুরু রচিত এই নৃত্যনাট্যের নির্বাচিত অংশে সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন সুপ্রিয়া চক্রবর্তী এবং নৃত্যাংশ পরিচালনায় ছিলেন সুমিতা রায়। অংশগ্রহণকারী অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে গানে ছিলেন জয়িতা চ্যাটার্জী, জয়তী মুখার্জী, সোমা মল্লিক, শম্পা কুন্ডু, ভাস্বতী বিশ্বাস, লিপা পাল মজুমদার, এমিলি চক্রবর্তী, সুপ্রিয়া চক্রবর্তী, ড: অংশু সেন, রণজয়ব্রত রায় ও অমিতাভ মল্লিক। নৃত্যে সুমিতা রায়, জিনিয়া ঘটক, কৌশিক ঘোষ, সায়নী চক্রবর্তী, টুন্না মজুমদার, অনিমা দাস, জাগরী ঘটক, শুভশ্রী নস্কর, তনুশ্রী সিং, স্বাগতা নস্কর ও পূজা দাস। ভাষ্যপাঠে দেবাশিষ সেনগুপ্ত, সোনালি গুপ্ত ও ইরা সর্বজ্ঞ। সুন্দর পরিচালনা গুণে এবং শিল্পীদের কণ্ঠদান ও নৃত্য সমন্বয়ে পরিবেশনাটি হয়ে উঠে নান্দনিক শ্রুতিমধুর। আমন্ত্রিত বিশিষ্ট অতিথি রূপে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ড.সুরঞ্জন দাস, উপাচার্য্য অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটি, আশীষ চ্যাটার্জী, অধিকর্তা ইডেন সিটি গ্রুপ। সোসাইটির তরফে মঞ্চে ছিলেন কার্যকরী সভাপতি ড.সুজিত কুমার বসু, সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় ও সহ-সম্পাদক রঞ্জিত কুমার নায়ক। মঞ্চে স্থাপিত কবিগুরু এবং কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদনের পর প্রারম্ভিক ভাষণ দেন সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। এর পর স্বল্প কথায় কবিগুরুর জীবন দর্শন সাহিত্য বিষয়ে আলোকপাত করেন ড.সুরঞ্জন দাস, আশীষ চ্যাটার্জী এবং ড. সুজিত কুমার বসু। সোসাইটির সাহিত্য পত্রিকা “কড়ি ও কোমল” এর নবতম সংখ্যাটি প্রকাশ ও উদবোধন করা হয় মঞ্চে আসীন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ববর্গের দ্বারা। পরের পর্বে সঙ্গীত ও আবৃত্তি পরিবেশন চলে। রবীন্দ্রসঙ্গীতে ছিলেন অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজশ্রী ভট্টাচার্য্য, মাধবী দত্ত, সুছন্দা ঘোষ, শিঞ্জিনী আচার্য্য মজুমদার, উৎসব দাস, আঁখি রায়, বাসবী বাগচী, সায়ন্তনী চক্রবর্তী, সুপ্রভা দত্ত, সুষমা প্রামাণিক, সৌমী মুখার্জী, পারমিতা চ্যাটার্জী, সঙ্গীতা বিশ্বাস, বিদিশা রায়, আর্যসায়ন ভট্টাচার্য্য ও শর্মিলা ব্যানার্জী দত্ত। আবৃত্তি পরিবেশনায় কাজল সুর, স্বপ্না দে, সুমন্ত্র সেনগুপ্ত, মুরারী মুখোপাধ্যায়, রোকেয়া রায়, সপ্তর্ষি রায়, অহনা ধর, শম্পা পাল, পারমিতা বসু রায়চৌধুরি, চৈতালী ভট্টাচার্য্য ও শ্বেতা পাল চৌধুরী। কবিপ্রণামে ২৯ তারিখ সন্ধ্যায় ব্রততী পরম্পরা গোষ্ঠীর সমবেত আবৃত্তি পরিবেশনা দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এই দিন সোসাইটির তরফে সম্মানীয় অতিথি রূপে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি সৌমিত্র পাল, সহ-সভাপতি, রবীন্দ্রভারতী সোসাইটি, সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়, সোসাইটির কর্মপরিচালন সমিতির সদস্য সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও সহ-সম্পাদক রঞ্জিত কুমার নায়ক মহাশয়। মঞ্চে কবিগুরুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদনের পর প্রারম্ভিক ভাষণ দেন সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। বক্তব্য রাখেন বিচারপতি সৌমিত্র পাল। রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশনায় ছিলেন স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, পিয়ালী বসু, দেবারতি সোম, জয়ন্তী সরেন, সৌমী বসু, দর্পনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়, প্রসেনজিত চক্রবর্তী, শিউলি ঘোষাল, অতসী দে, সিঞ্চিতা চক্রবর্তী, পৌলমী চক্রবর্তী, সোমা চক্রবর্তী, মল্লিকা গুপ্ত ভায়া সরকার, সুমন দাস, কেকা পল্যে ও সঙ্ঘমিত্রা বসাক। অসামান্য কণ্ঠমাধুর্য্যে পর পর চার খানি রবীন্দ্রগান গেয়ে শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত। রবীন্দ্রকবিতা আবৃত্তি পরিবেশনায় জগন্নাথ বসু, ঊর্মিমালা বসু, রজত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রণতি ঠাকুর, ঈশিতা দাস অধিকারী, সুদেষ্ণা দত্ত, সুতপা ঘোষ, সঞ্চিতা সেন, মানসী সাধুখাঁ,সাবিনা ইয়াসমিন, নির্মাল্য ভট্টাচার্য্য, তনিমা পালিত ও মধুমিতা গঙ্গোপাধ্যায়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যথাক্রমে তৃপ্তি কুন্ডু রায়, নন্দিনী লাহা, পারমিতা সমাদ্দার ও চন্দ্রজিৎ প্রামাণিক। শ্রোতৃদর্শক পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে যথাযোগ্য মর্য্যাদা সহকারে দুইদিনের কবিপ্রণাম অনুষ্ঠান চলে ভাবগম্ভীর পরিবেশে। সমবেত কণ্ঠে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার পর শেষ হয় কবিপ্রণাম অনুষ্ঠান।