‘সকলকে বয়সের ছাড় নয়’,এসএসসির নুতন বিজ্ঞপ্তি মামলায় হাইকোর্টের রায় বহাল রাখলো সুপ্রিম কোর্ট
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
শুক্রবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের এসএলএসটি ২০২৫ নিয়োগ সংক্রান্ত নতুন বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট। এদিন শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, -‘সকল চাকরিপ্রার্থীকে বয়সে ছাড় দেওয়া যাবে না। তবে মানবিক কারণ থাকলে ব্যতিক্রম করা যেতে পারে’। এই সিদ্ধান্তে কয়েক হাজার চাকরিহারা শিক্ষক পরীক্ষায় বসতে পারবেন না বলে স্পষ্ট হয়েছে।২৬ হাজারের বেশি চাকরি বাতিলের রায় দেওয়ার পর নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল এসএসসি । কিন্তু বিজ্ঞপ্তির একাধিক নিয়ম নিয়ে আপত্তি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যান চাকরিহারা প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি ছিল, -‘২০১৬ সালের মতোই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা উচিত, যাতে বয়সসীমা, শূন্যপদ সংখ্যা এবং নম্বরের নিয়মে পুরনো শর্ত বজায় থাকে’। তবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়,-‘ স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে হস্তক্ষেপ করা হবে না’। আদালতের মতে, দ্রুত শূন্যপদ পূরণই এখন সবচেয়ে জরুরি, নইলে আরও জটিলতা তৈরি হতে পারে।এই রায়ের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে যান মামলাকারীরা। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ জানায়, -‘পূর্ববর্তী রায়ে বলা হয়েছিল, সবাইকে বয়সে ছাড় দেওয়া যাবে না। তবে ক্যানসার আক্রান্ত শিক্ষক সোমা রায়ের মতো বিশেষ পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রম হতে পারে। অর্থাৎ, এসএলএসটি ২০২৫-এ মানবিক কারণ ছাড়া বয়সে ছাড় মিলবে না।প্রার্থীদের অভিযোগ ছিল, -‘নতুন বিজ্ঞপ্তিতে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেও বয়সে ছাড়ের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রাখা হয়েছে’। স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, -‘সাধারণ প্রার্থীদের বয়সসীমা ২১ থেকে ৪০ বছর, ওবিসি, এসসি, এসটি ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী ছাড় থাকবে। এছাড়া, শুধুমাত্র বিশেষ পরিস্থিতিতে চাকরিহারা প্রার্থীদের জন্য বয়সে ছাড় প্রযোজ্য হবে’।উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৬ সালের নিয়োগ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৫,৭৫২ জনের চাকরি বাতিল হয়, যেখানে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন ক্যানসার আক্রান্ত সোমা রায়। তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমার মানবিক কারণ দেখিয়ে তাঁর চাকরি বহাল রাখেন। বীরভূমের নলহাটি-১ ব্লকের মধুরা হাই স্কুলে বাংলার শিক্ষক হিসেবে তিনি এখনও কর্মরত।এই সিদ্ধান্তে স্পষ্ট, পরীক্ষায় সবাইকে বয়সে ছাড়ের সুযোগ দেওয়া হবে না, এরফলে বহু চাকরিহারা শিক্ষক আবারও নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়বেন। সুপ্রিম কোর্টের এই অবস্থান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গতি আনলেও, বঞ্চিত প্রার্থীদের জন্য তা বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ।