অগ্নিযুগের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রামাণ্য দলিল অপরাজেয় রাসবিহারী
মৃত্যুঞ্জয় রায়
নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু কি আর সাধে রাসবিহারী বসুকে ‘ Father of Indian National Movement ‘ বলেছেন ? তিনি জানতেন, রাসবিহারী বসুর সাংগঠনিক দক্ষতা আর কূটনৈতিক বুদ্ধি তাঁর চেয়ে অনেক বেশি । তা নাহলে রাসবিহারী বসু জাপানে গিয়ে ব্রিটিশদের ঝানু গোয়েন্দাদের চোখ এড়িয়ে সারা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় অত বড়ো মাপের শক্তিশালী সংগঠন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লিগ আর তার অধীনে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি গড়ে তুলতে পারতেন না ।
রাসবিহারী বসুকে নিয়ে এতকাল যত বই বেরিয়েছে, তা সবই মিথ আর বিভিন্ন বিপ্লবীর স্মৃতিচারণ নির্ভর। রাসবিহারী বসু ১৯০৪ সাল থেকেই বাংলার বাইরে । তিনি যে বিপ্লবী দল গড়ে তোলেন, তাও বাংলার বাইরে । তাই বাংলার বাইরে তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে সেভাবে যথার্থ অনুসন্ধানও হয়নি । দেহরা দুন, শাহরনপুর, অমৃতসর, দিল্লি গিয়ে যাবতীয় গোয়েন্দা রিপোর্ট, দেহরা দুনে ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে রাসবিহারী বসুর পার্সোনাল ফাইল বের করে ছুটির তালিকা, নানান দরখাস্ত থেকে যাবতীয় ঐতিহাসিক তথ্য বের করার পাশাপাশি পরিবারের প্রবীণদের সঙ্গে কথা বলে পারিবারিক ইতিহাস বের করে এই প্রথম ভারতবর্ষে রাসবিহারী বসুর কর্মকাণ্ডর পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস নিয়ে বেরিয়েছে ‘ সুখবর ‘ এর সম্পাদক শমীকস্বপন ঘোষের লেখা ‘অপরাজেয় রাসবিহারী’ ( পারুলবই, দাম : ১,৭০০ টাকা)।।লেখক জানান,
‘ভারতবর্ষে থাকার সময় রাসবিহারী বসু যেসব জায়গায় ছিলেন, সেইসব জায়গায় প্রায় বছর আটেক ফিল্ড স্টাডি করে এই বই লিখেছি। শুধু রাসবিহারী বসু নয়, তাঁর আশপাশে যাঁরা ছিলেন তাদেরও তুলে ধরেছি। বিপ্লবীদের রক্ত মাংসের মানুষ হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। জাদু বাস্তবতায় উঠে এসেছে সেই সময়। পাঠকদের ভালো লাগলে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে। ‘
থ্রিলারের মতো টানটান গদ্যে লেখা এই জীবন-উপন্যাস একবার পড়তে শুরু করলে আর ছাড়তে পারবেন না । এর মধ্যে বইটি পাঠক মহলে দারুন সাড়া ফেলেছে।