বুথ স্তরের কর্মী সম্মেলনে দুর্বল এলাকায় জনসংযোগে জোর
অঙ্কের কাটাকুটিতে লোকসভা ভোটে জেতার হিসেবে শতাব্দী
খায়রুল আনাম
এবারের লোকসভা ভোটে বীরভূম জেলায় শাসক তৃণমূল কংগ্রেস জেলায় তাদের জেতা দু’টি আসনই যেমন ধরে রাখতে বদ্ধ পরিকর তেমনি, অপরদিকে বিরোধী হিসেবে থাকা বিজেপি ঘর গোছাতে গিয়ে দলের ঘরোয়া কোন্দলে এমনই জেরবার যে, লোকসভা ভোটের লক্ষ্যই তারা ঠাহর করতে পারছে না। আর অপরদিকে থাকা বামফ্রন্টের প্রধান শরীক সিপিএম বামফ্রন্টের অন্য শরীক দলগুলির কোনও মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে কখন কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরী তাদের ‘আশ্বস্ত করে’ কখন হাত ধরবেন, সেই প্রত্যাশায় বসে বসে কলকাতার ব্রিগেডে দলের ‘ক্যাপ্টেন’ মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের দেওয়া ভাষণ মোবাইল রেকর্ডে শুনে মানুষের তাদের দিকে ফেরার অঙ্ক কষছেন। বিগত ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটেও মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে জেলায় এনে এভাবেই জেতার অঙ্ক কষে হাতে পেন্সিল ব্যতিত আর কিছুই ধরে রাখতে পারেনি। ভোটের টি–২০ ম্যাচ খেলার প্রত্যাশী সিপিএম এবারের লোকসভা ভোটে যে হাতে পেন্সিল ব্যতিত আর কিছু ধরে রাখতে পারবে না, তা অনেকেই মনে করছেন। আর তারসাথে শাসক বিরোধী শক্তি বিজেপি যে ভাবে জেলায় দলীয় অর্ন্তকলহে জেরবার হয়ে পড়েছে তাতে, তারা জেলায় লোকসভা ভোটে কতোদিন লড়াই দিতে পারবে তা নিয়ে এখন থেকেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
আর এই জায়গাটি থেকেই লোকসভা ভোটে জেতার অঙ্ক কষতে শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। জেলার দু’টি লোকসভা আসনই রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে। এরমধ্যে বোলপুর লোকসভা আসনের প্রার্থীর ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেস স্পষ্ট কোনও ইঙ্গিত দেয়নি। কিন্তু বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে তিনবারের জয়ী তারকা সাংসদ শতাব্দী রায় যে চতুর্থবারের জন্য প্রার্থী হচ্ছেন তা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। আর সেই নিশ্চয়তার ইঙ্গিতে শতাব্দী রায় ভোট অঙ্কের কাটাকুটিতে জেতার লক্ষ্যে বুথ স্তরের কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে কর্মী সম্মেলনের উপরে বেশি জোর দিতে শুরু করেছেন। সিউড়ির ইণ্ডোর স্টেডিয়ামের কর্মী সম্মেলনে অতীতে তিনি ‘সব কাজ করে দেওয়া সত্বেও’ বিণিন্ন জায়গায় বিগত ভোটে তিনি পিছিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দলীয় কর্মীদের কাছেই। আর এবার তিনি সিউড়ির সিধু-কানহু মঞ্চে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা সম্মেলনে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণভাবে মাতৃত্বকালীন ছুটির মতো মুখ্যমন্ত্রী বাংলায় পিতৃত্বকালীন ছুটি দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন। সেইসাথে তিনি সরকারি কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে দাবি করেন যে, সরকার আপনাদের পাশে যতোটা সম্ভব রয়েছেন। আর সেইসাথে শতাব্দী রায়ের সংযোজন, আপনারাও সরকারের ভালো কাজের কথা মনে রেখে পাশে থাকবেন, এই আশা রাখি। সেই সাথে একই দিনে তিনি একইভাবে মহম্মদবাজার, সিউড়ি এলাকার দলীয় কর্মীদের নিয়ে বুথ স্তরের কর্মী সম্মেলনও করেন। সেখানে তিনি দলীয় কর্মীদের একযোগে সর্বশক্তি নিয়ে ভোট-মাঠে নামার আহ্বানও জানান। তিনি দলীয় কর্মীদের বলেন, নিজেদের দুর্বল জায়গাগুলি ধরে ধরে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ বাড়াতে হবে। সাংসদ তহবিলের অর্থে কী কী কাজ হয়েছে তার হিসেব নিয়েই তিনি দলীয় কর্মীদের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেই সাথে তিনি কর্মীদের মনোবল বাড়াতে ভোট-অঙ্কের কাটাকুটিতে ভালো ফল করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তাদের কাছে।।
ছবি : সম্মেলনে শতাব্দী রায়।