অবসরপ্রাপ্ত ফৌজিকে গণ সংবর্ধনা রাইপুরে।
শুভদীপ ঋজু মন্ডল বাঁকুড়া:—রাইপুর বাজারে এক সময়ের ক্রীড়া প্রেমী ও দক্ষ খেলোয়াড় বিষ্ণুপদ সর্দার ভারতীয় সেনাবাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স ডিপার্টমেন্টে কাজে যোগদান করেন ১৯৮৬ সালের মার্চ মাসে ।গত ৩১ শে মার্চ তিনি কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন ।ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ ,আসাম, ত্রিপুরা, পাঞ্জাব ,রাজস্থান, হরিয়ানা এবং শেষ বয়সে জম্মু-কাশ্মীরে কর্মরত ছিলেন । সেখানেই থাকাকালীন গত ৩১শে মার্চ তিনি অবসর গ্রহণ করেন ,সেখান থেকেই আজ সকালে রাইপুরের বাড়িতে পৌঁছানোর আগে রাইপুর সবুজ বাজার ট্রাকার স্ট্যান্ডের সামনে রাইপুর বাজার এলাকার অধিবাসীবৃন্দ তাকে সম্বর্ধনা জানান ।জাতীয় পতাকায় মুড়ে ফেলা হয় সবুজ বাজার চত্বর। শঙ্খ ধ্বনি উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে তাকে ফুল মালা দিয়ে প্রথম বরণ করে নেন এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষক ও সাংবাদিক সাধন মন্ডল এর পরে অজস্র মহিলা ,শিশু যুব সম্প্রদায় ও দেশপ্রেমী মানুষজন তাকে বরণ করেন ।ব্যান্ড পার্টিতে দেশাত্মবোধক সংগীতের মধ্য দিয়ে এবং পুষ্পবৃষ্টির মধ্য দিয়ে তাকে নিয়ে দুই কিলোমিটারেরও বেশি পথ মিছিল সহকারে অতিক্রম করে তার বাড়িতে পৌঁছে দেন এলাকাবাসী। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন আমি কিছুক্ষণের জন্য আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েছিলাম ভাবতে পারিনি যে একজন সেনাবাহিনীর মানুষকে রাইপুরবাসী এভাবে সম্বর্ধনা জানাবে। আমি গর্বিত ও কৃতজ্ঞ। গর্বের সহিত দেশকে ভালোবেসে প্রায় 40 বছর দেশের সেবা করে কয়েকদিন আগে অবসর নিয়েছি আজ আমার জন্মস্থানে ফিরে এলাম। কঠিন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে প্রায় চল্লিশটি বছর কাটিয়েছি, বিদেশী শত্রুদের সাথে বারবার গুলির লড়াই হয়েছে ভারত মাতা আমাদের রক্ষা করেছেন ।বিদেশি শত্রুকে পরাজিত করেছি বারবার গুলির লড়াই হলেও লড়াইয়ে নিজেদের আত্মরক্ষা করেছি এবং ভারত মাতার ভালোবাসায় আজ বাড়ি ফিরলাম শেষ জীবনটা কেটেছে জম্মু-কাশ্মীরে যেখানে প্রতিনিয়ত গুলির লড়াই চলছে। ভারতমাতার একখন্ড জমি বাইরের শত্রুকে দখল করতে দেব না আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকি দেশমাতাকে রক্ষা করার জন্য। চাকরি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রক্ষাকরে এসেছি। যারা এখনো কর্মরত রয়েছেন তারা সকলে দেশপ্রেমী। আমি তাদের দেশপ্রেম কে শ্রদ্ধা জানাই । তিনি আরো বলেন শিশু বয়স থেকেই দেশের হয়ে কাজ করার ইচ্ছে ছিল আমার শিক্ষক মশায়য়দের কাছ থেকে দেশ প্রেম জাগ্রত হয়েছিল। তাই আমি এই বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সে চাকরি করার চেষ্টা করেছিলাম এবং সফল হয়েছিলাম দীর্ঘ প্রায় 40 বছর চাকরি করার পর অবসর গ্রহণ করে বাড়ি এলাম। আজ যারা আমাকে এভাবে সম্মান জানালো তারা আমাকে নয়, আমার দেশকে আমার ভারত মাতা কে সম্মান জানালো। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। গ্রামবাসী রন্টু রাজক, বুদ্ধদেব কদমা, মিনতি কদমা, বাদল রজক, পূর্ণিমা রজক, শুক্লা রজক রা বলেন আমরা যখন শুনলাম উনি বাড়ি আসছেন তখনই সিদ্ধান্ত নিই এইরকম একজন বিদ সৈনিককে আমাদের সম্মান জানানো উচিত তাই আমরা তাকে এবং দেশমাতা কে সম্মান জানাবার চেষ্টা করলাম। উলুধ্বনি শঙ্খ ধ্বনিও পুষ্প বৃষ্টির মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে তাকে তার জন্মভূমিতে নিয়ে এলাম। আমরা গর্বিত যে এরকম একজন মানুষকে সম্মান জানাতে পারলাম।