‘অভিযুক্ত কখনোই তদন্তের গতিপ্রকৃতি ঠিক করে দিতে পারেনা’ সন্দীপের আবেদন খারিজ করে জানালো সুপ্রিম কোর্ট
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে খারিজ সন্দীপ ঘোষের পিটিশন। এদিন আরজিকর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের শুনানিতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা আছি নিরপেক্ষভাবে যাতে তদন্ত হয় সেটা দেখার জন্য।সিবিআইকে তদন্ত করতে দিন। আমরা রিপোর্ট চেয়েছি। একজন অভিযুক্ত কখনও ঠিক করে দিতে পারে না, কীভাবে তদন্ত চলবে।” আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের আলাদা স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে।উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করছে সিবিআই। তদন্ত সূত্রেই গ্রেফতার হয়েছেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আর্থিক দুর্নীতিতে হাইকোর্টের সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সন্দীপ। এই মামলায় রক্ষাকবচের আবেদনও করেছিলেন তিনি। গত সোমবার রাতে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন সন্দীপ। সুপ্রিম কোর্টে সন্দীপের দায়ের করা মামলার শুনানি হল শুক্রবার। আর সেই আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ইডিকে দিয়ে তদন্ত করাতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই হাসপাতালের প্রাক্তন অতিরিক্ত সুপার আখতার আলি। আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতির পাশাপাশি মৃতদেহ এবং বায়ো মেডিক্যাল বর্জ্য পাচার, তোলাবাজির অভিযোগও এনেছিলেন তিনি। ইডি তদন্তের আর্জির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ অগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের পর্যবেক্ষণ , -‘একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে বিষয়টি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ হতে পারে’। তাই মূল ঘটনার সঙ্গে ওই হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির তদন্তও সিবিআই করবে বলে জানিয়েছিল উচ্চ আদালত। আদালতের নির্দেশের পরই এফআইআর দায়ের করে সিবিআই তদন্ত শুরু করে। গ্রেফতার করা হয় সন্দীপকে।এদিকে, আরজি কর দুর্নীতি মামলায় শুক্রবার ময়দানে নেমেছে আরেক কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি। সিবিআই এফআইআর করার পরে ইডির তরফে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ইসিআইআর করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। দুর্নীতি মামলায় এবার তল্লাশির জন্য শুক্রবার সকাল সকাল সন্দীপ ঘোষের বাড়িতে পৌঁছে যায় ইডির টিম। এছাড়াও আরও নানান জায়গায় হানা দিয়েছে ইডি। সুপ্রিম কোর্টে সন্দীপ ঘোষের আবেদন ছিল, -‘আর্থিক দুর্নীতি মামলায় যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং মূল যে ধর্ষণের মামলা, পুরো বিষয়টি একসঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে’। তাতেই আপত্তি তাঁর।আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের আলাদা স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিবিআইকে। আদালত জানিয়েছে, -‘এই মুহূর্তে এই মামলার কোনও গুরুত্ব নেই’। তাই শীর্ষ আদালতে খারিজ হয়ে গেল আবেদন। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়ে দেন,-‘ হাইকোর্ট এটা প্রাথমিক মন্তব্য করেছে। তদন্ত চলছে। সিবিআইয়ের কাছেও তথ্য চাওয়া হয়েছে’। সন্দীপের আইনজীবী বলেন, তাঁরাও চান চাই সিবিআই নিরপেক্ষ তদন্ত করুক বায়োমেডিকেল ওয়েস্ট নিয়ে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের পর্যবেক্ষণ, -‘একজন অভিযুক্ত কখনওই তদন্তের গতিপ্রকৃতি কীভাবে এগোবে তা নিয়ে নির্দেশ দিতে পারেন না’। তার প্রেক্ষিতেই যাবতীয় আবেদন খারিজ হয়ে যায় সন্দীপের। সিবিআইকে স্টেটাস রিপোর্টও দিতে বলে আদালত। এর আগে আরজি করের নির্যাতন-খুন মামলাতেও স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল। যা জমাও দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ।