আজ আরজিকর কান্ডে নবান্ন অভিযান, শান্তি অটুট রাখতে পুলিশের হাতিয়ার হাইকোর্টের রায়
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
আজ অর্থাৎ শনিবার (৯ অগস্ট)। গত বছর এই দিনেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চারতলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক ডাক্তারি চিকিৎসক পড়ুয়ার রক্তাক্ত দেহ। ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছিল, -‘ধর্ষণের পর খুন করা হয় তাঁকে’। ওই ঘটনার এক বছর পরেও ‘প্রকৃত অপরাধীরা’ ধরা পড়েনি, এই অভিযোগে আক নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে নাগরিক সমাজ।রাজ্যের বিরোধী দলনেতার উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। যার জেরে রাজ্য প্রশাসনের সদর কার্যালয় নবান্ন এবং সংলগ্ন এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। এমন সম্ভাবনা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই নবান্নমুখী একাধিক রাস্তায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা শুরু করল পুলিশ প্রশাসন ।হাওড়ার সাঁতরাগাছি, ফোরশোর রোডের বাঁশতলা মোড়, জিটি রোড লাগোয়া হাওড়া ময়দান— এইসব গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে লোহার বিম ঢালাই করে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। ব্যারিকেডগুলিকে নাট-বল্টুর সাহায্যে শক্ত করে আটকে দেওয়া হচ্ছে যাতে কোনওভাবেই তা ভেঙে পেরনো সম্ভব না হয়।এছাড়াও মল্লিক ফটক, কাজীপাড়া, ব্যতাই তলা সহ আরও বেশ কিছু জায়গায় বাঁশ ও লোহার তৈরি অতিরিক্ত ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের দাবি,-‘ বিশৃঙ্খলা ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা’। এর পাশাপাশি, সাঁতরাগাছিতে তৈরি করা হয়েছে একটি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম । লোহার কন্টেনারেই থাকবে পুলিশের এই বিশেষ নজরদারি ইউনিট। শুক্রবার বিকেলে সেখানে ও হাওড়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা পর্যালোচনায় বৈঠকে বসেন রাজ্য পুলিশের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।জানা গেছে, আজ অর্থাৎ শনিবারের অভিযান ঘিরে বিভিন্ন পদমর্যাদা পূর্ণ পুলিশকর্মীদের একাধিক স্তরে মোতায়েন করা হবে। বড় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য সতর্ক রয়েছে গোটা পুলিশ প্রশাসন।তবে গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ অশান্তি রুখতে পুলিশ কে যে স্বাধীনতা দিয়েছে, তাতে রাজ্য পুলিশ প্রস্তুত বলে জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চে জানায় , -‘পুলিশ বা সরকারের অনুমতি ছাড়া কেউ প্রতিবাদ করতে পারবেন না। রাজ্য সরকার নির্দিষ্ট বিকল্প স্থানে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অনুমতি দিতে পারে’। একইসঙ্গে আরও জানায় ডিভিশন বেঞ্চ -‘হিংসা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা সম্পূর্ণরূপে বেআইনি। ভারতীয় সংবিধানের ধারা ৫১এ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য, তিনি যেন সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করেন ও হিংসা বর্জন করেন’।পূর্ব অভিজ্ঞতার কথা মনে করিয়ে ওইদিন হাইকোর্টে জোরাল সওয়াল করে রাজ্যও। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর জানান, -‘নবান্ন অভিযানের কথা আমরা সামাজিক মাধ্যম এবং বিভিন্ন পোস্টার থেকে জানতে পারছি। ছাত্র সমাজের নামে অভিযানের ডাক দেওয়া হচ্ছে। গতবছর নবান্ন অভিযানের সময় ৪৭ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছিলেন’। একজন পুলিশ কর্মীর চোখও যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সে কথাও মনে করান তিনি। গত বছরের ১৪৭ জন গ্রেফতার হয়েছিল। বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয়। রাজ্যের তরফে দুটি বিকল্প জায়গার কথা বলা হয়।