ইচ্ছে ডানায় ভর করে নিরাপত্তা রক্ষীর সামান্য চাকরি থেকে আজ হাজার জনের রুটি রুজির সংস্থান করেছেন বঙ্গতনয় বিশ্বজিৎ দেবনাথ
শ্রীজিৎ চট্টরাজ : রেখেছো বাঙালি করে , মানুষ করো নি রবি কবির এই কথা অন্তত নিউটাউনের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দেবনাথের ক্ষেত্রে যে ফলে না তা হলফ করে বলাই যায় । প্রথম জীবনে সামান্য নিরাপত্তারক্ষীর ১২ হাজার টাকার মাইনের চাকরি।এখন তাঁর অবদানে হাজার মানুষের রুটি রুজি হচ্ছে। স্ত্রী শুক্লা দেবনাথ দাসের সহযোগিতায় গড়ে তুলেছেন বিজনেস ডেভলপমেন্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড ।মূলত যানবাহন পরিষেবা দেন বিশ্বজিৎ বাবু। কলকাতার চারটি কেন্দ্র থেকে ১৪০০ ছাত্রছাত্রীদের পুল কার সেবা পরিষেবা দেওয়া হয়। সাধারণত কলকাতার স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বাধ্য হয়ে স্কুলে পাঠাতে অভিভাবকেরা পুলকারের সাহায্য নেন বটে, কিন্তু সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ে থাকেন। অধিকাংশ পুল কারের নেই প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক কাগজপত্র। নেই কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বীমার সুযোগ।
এই পরিস্থিতি লক্ষ্য করে বিশ্বজিৎ দেবনাথ ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলে নিয়ে আসা ও বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে পুলকার পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছেন। বিশ্বজিৎ বাবু জানালেন, তাঁদের প্রতিটি গাড়িতে আছে জি পি এস। ফলে সংস্থার অফিস থেকে প্রতিটি গাড়িতে তীক্ষ্ণ নজর রাখা হয়। প্রতি গাড়িতে মহিলা স্কট রাখা হয়। পরিষেবায় নিয়োজিত প্রতিটি গাড়িতে প্রশাসনিক বিভাগের আইনি ছাড়পত্র রাখা হয়। পুলিশের সঙ্গেও রয়েছে পেশাদারী যোগাযোগ। অভিভাবকেরা নিজ নিশ্চিন্তে তাঁদের সন্তানদের বিশ্বজিৎবাবুর পরিষেবায় সন্তুষ্ট। সেকথাও জানালেন, বেশ কয়েকজন অভিভাবক।
বিশ্বজিৎবাবুর অন্যান্য ব্যবসাও আছে। শনিবার অফিস প্রাঙ্গণে আয়োজন হয় বিশ্বকর্মা পুজো। এই দিনের অনুষ্ঠানে পুলকার পরিষেবাগ্রহণকারী শিশুদের সঙ্গে এসেছিলেন অভিভাবকেরাও। আয়োজন ছিল কবজি ডুবিয়ে খাওয়া দাওয়ার এলাহী আয়োজন। ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন।সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বিশ্বজিৎবাবু জানালেন, অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি এই পুলকার ব্যবসার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন স্থানীয় এ ডি এম রবিকিরণের কাছ থেকে। রবিকিরণ জানালেন, বিশ্বজিৎ দেবনাথের কঠোর পরিশ্রম,অধ্যবসায় ও প্রবল ইচ্ছশক্তি তাঁকে সাফল্য এনে দিচ্ছে। স্থানীয় জনসাধারণ ও বিশিষ্ট জনের উপস্থিতিতে বিশ্বকর্মা পুজোর যে আয়োজন হয় তার সার্থকতা নিয়ে কোনো প্রশ্নই নেই।