ইয়াস কি আমফানের মতো ত্রাস হয়ে উঠছে?

Spread the love

যশ কি আমফানের মতো আমাদের কাছে ত্রাস হয়ে উঠবে ?

আজ এই ঘোর দুর্দিনে স‍্যার আইজ‍্যাক নিউটনের তৃতীয় সূত্রের কথা মনে পড়ে ।প্রতিটা ক্রিয়ার সমান বিপরীতমুখি প্রতিক্রিয়া আছে। ‌ ক্রিয়া থাকলে তার সমান প্রতিক্রিয়া থাকবে ।এই নিত‍্য সত‍্য কখনও আমরা ভুলে যাই ।তার ফলশ্রুতি হচ্ছে সুনামি আইলা-লায়লা-ফনি-দাবানল-কোভিড-আমফান । সে ভয়ঙ্করী রূপ ধারন করে তার প্রতিশোধ এখন প্রতিশোধে মেটাতে চায়। তাই এখন ধেয়ে আসছে দানব ঝড় যশ বা ইয়াস ।প্রতিমুহুর্তে আমরা অসহায়তা বোধ করি ,এই বুঝি আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হয় ।গতবছর ধরে আমরা লড়াই করে আসছি মহামারি কোভিডের বিরুদ্ধে ।কত জনের যে কোভিডে প্রান গেল হিসেবে করে বলা খুব কঠিন ‌। আর কত জন যে যাবে, কখন সে থামবে কেউ তা জানে না ‌।একের পর এক কোভিডের ঢেউ আসছে ‌আর তার রুপ পরিবর্তন করে আগের থেকে আরো বেশী কঠোর হচ্ছে । আরোও বেশি মৃত্যু যন্ত্রনা ।ভ‍্যাকসিন মিলছে বটে কিন্তু মৃত্যুর হার কমছে কই ?
নিউটনের তৃতীয় সূত্র ধরে প্রকৃতি রুষ্ট হয়ে কখন সে ঝড়ের তাণ্ডব লীলা চালায় , কখনও তা সুনামি ,আমফান হতে পারে, কখনও বা দাবানল হয়ে আমাজনের বনে দেখা যায় ।আমাদের অস্তিত্ব সংকট করে তোলে ‌। আমরা পথ খুঁজে পাই না কি ভাবে বাঁচব ,কোথায় আশ্রয় নেব? সারা পৃথিবী জুড়ে তার তাণ্ডব লীলা ‌।মনে হয় আলো-ছায়া ,রোদ-মেঘ এই সুন্দর পৃথিবী আমাদের জন‍্যে নয় ।মন হয় আমাদের প্রেম-ভালোবাসা ব‍্যর্থ অনুভূতি ‌ মাত্র ।আমাদের এই সুন্দর পৃথিবী অসুন্দর করে তোলার প্রধান কারণ মানুষ নিজে ‌।মানুষ তার নিজের সুবিধার্থ সুন্দর করে সাজানো প্রকৃতির একের পর এক ধ্বংস করে নিজের মত করে গড়তে চেয়েছে । পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করে । বাঁধ দিয়ে নদীর গতি পথ রুদ্ধ করে ‌। নায়েগ্ৰা জলপ্রপাতের গান শুনেও তাকে বন্দি করেছি ।ভালোবাসার ছল আর কি। নির্বিচারে অরন‍্য ধ্বংস করছি।পশু শিকার করছি ।মানুষ সবচেয়ে বড় খুনি ।তার বিচার করবে কে ?শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে যে পাপ আমরা করছি,তার দায়ভার কে নেবে ?এতো দিন ধরে সুন্দরের নামে অসুন্দরের আরাধনা করে আসছি তার ফল ভোগ করতে হবে না ?আজ যুদ্ধের ঝনঝনানিতে শান্ত পৃথিবী অশান্ত হয়ে উঠেছে ।
তার অধিকার নিয়ে একটুও ভাবিনি।প্রেমের কবিতা লিখলে ও তার প্রতি আমাদের কোন প্রেম নেই । ভালোবাসাকে ভলোবাসতে পারি নি । জানি না কে শেখাল আমাদের ভালোবাসাকে ঘৃনা করতে ? মানুষ এতো স্বার্থপর, এতো আত্নমগ্ন ,একটুও ভাবেনি তার দুঃখ, কষ্ট,ব‍্যাথা,যন্ত্রণার কথা ‌। প্রকৃতি একটু র্নিমম হলে আমরা বিপন্নতা বোধ করি ।মনে হয় আমরা তার কাছে নিমিত্ত মাত্র ।লোভ,হিংসা অহংকারের কাছে এই নিমিত্ত বোধ আমরা হারিয়ে ফেলি।আমরা অমানবিক হয়ে উঠি ।নৃশংস ভাবে তাকে কুঠারাঘাত করি ।
আজ মহামারি কোভিডের মাঝে আমফানের মতো যশ ছুটে আসছে । গোদের উপর বিষ ফোঁড়া ।আমরা ভয়ে বাঁচি-মরি করে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজি। ‌আমরা কি সুনামিতে আশ্রয় পেয়েছিলাম?আমফানে? কোভিডে শশ্মান ছাড়া আর কোথায় নিরাপদ আশ্রয় আছে?আমফানের মতো সেই যশ নামক দানব ঝড় বঙ্গপোসাগরের জঠর থেকে বাহির হয়ে যদি ছুটে আসে কে বাঁচাবে আমাদেরকে? যদি ভাগ‍্যের জোরে আজ বেঁচে যাই ,কিন্তু আগামীদিনে ?
মানুষ আজ এই গ্ৰহের এক অসাহায় বিপন্ন প্রজাতি ।সে যদি এখানে বেঁচে থাকতে চায়,প্রকৃতির কোলে নিরাপদ আশ্রয় চায়,প্রকৃতিকে ভালোবাসতেই হবে ।তার ভালোবাসাকে সম্মান জানাতে হবে ।তবে সে শান্ত হবে ।মানুষ বাঁচবে ‌‌। প্রকৃতির প্রতি ধ্বংসাত্মক ক্রিয়া বন্ধ হলে ,সুনামি -দাবানল-কোভিড -আমফান -যশ র মতো প্রকৃতির রুষ্ট প্রতিক্রিয়া আমাদেরকে আর দেখতে হবে না ।
সুবল সরদার
মগরাহাট
দক্ষিন ২৪পরগণা
তাং ২৪ ০৫ ২০২১
ফোন নঃ ৯৬০৯০৫৮৫২০

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *