মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু ),
উচ্চপ্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করলো কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চ। পাশাপাশি পরীক্ষা পরবর্তী সমস্ত প্রক্রিয়া নুতন করে চালু করবার নির্দেশ দেয় এই বেঞ্চ, তাও নিদিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট বহু প্রতিক্ষিত এই মামলার রায়দান শোনালো। আড়াই হাজারের বেশি পরীক্ষার্থীদের দায়ের করা দু হাজারের কাছাকাছি এইসব মামলার একযোগে শুনানিতে শুক্রবার এই রায়দান ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চ। গত ২০১৪ সালে উচ্চপ্রাথমিকে নিয়োগ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারীর পর লোকসভা ভোটপর্বের জন্য এই পরীক্ষা সূচির বদল ঘটে। ২০১৫ সালে আগস্ট মাসে উচ্চপ্রাথমিকে পনেরো হাজার শুন্যপদের জন্য পাঁচ লক্ষ তেতাল্লিশ হাজার পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষা দেয়।এতদূর অবধি সব ঠিকঠাক ছিল। ২০১৯ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়ে ভেরিফিকেশন থেকে ইন্টারভিউ পর্ব অবধি অনিয়ম – দুর্নীতি – স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠে উচ্চপ্রাথমিকে পরীক্ষার্থীদের বড় অংশের তরফে। কলকাতা হাইকোর্টে আড়াই হাজার মত পরীক্ষার্থী দফায় দফায় দু হাজারের কাছাকাছি মামলা দায়ের করেন। মূলত উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যারা প্রশিক্ষিত তাদের কে না ইন্টারভিউ তে না ডেকে অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় মেরিট লিস্টে। এমনকি ডকুমেন্টস ভেরিফিকেশন নিয়ে নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশক্রমে সমস্ত মামলা আলাদা আলাদা বেঞ্চ থেকে সরিয়ে বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চে আনা হয় শুনানির জন্য। টানা সাত বছর পর এইবিধ মামলাগুলির শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে রায়দান ঘটে। সেখানে বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য উচ্চপ্রাথমিকে অতীতের সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া ( ডকুমেন্টস ভেরিফিকেশন থেকে মেরিট লিস্ট) আইন মেনে হয়নি বলে আদেশনামায় জানিয়েছেন। পাশাপাশি আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি থেকে উচ্চপ্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করবার নির্দেশ দেন। ৫ এপ্রিলের মধ্যে ডকুমেন্টস ভেরিফিকেশন শেষ করার নির্দেশিকা রয়েছে। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে মেধাতালিকা প্রকাশের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চ। এহেন রায়ে মামলাকারীদের একাংশের আইনজীবী ভিষক ভট্টাচার্য ও
রুচিরা চট্টপাধ্যায়
জানিয়েছেন – ” উচ্চপ্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে যে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে, তা আজ মহামান্য আদালতের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণায় প্রমাণ হয়ে গেল “। যদিও এই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার দ্রুত আপিল পিটিশন দাখিল করতে চলেছে বলে জানা গেছে।