উচ্চমাধ্যমিকে মেধা তালিকায় সাঁওতালি বিভাগে (অলচিকি মাধ্যমে) রাজ্যে প্রথম কাঠগড়া গ্রামের মেয়ে জ্যোৎস্না কিসকু:
—– সাধন মন্ডল বাঁকুড়া:—–। আজ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষিত হল আর এদিনের এই পরীক্ষার মেধা তালিকায় সাঁওতালি বিভাগে (অলচিকি) মাধ্যমে রাজ্যের প্রথম স্থান অধিকার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো রাইপুর ব্লকের চাতরি পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী জ্যোৎস্না কিসকু। তার প্রাপ্ত নাম্বার ৪৮৬ ,অত্যন্ত গরিব বাড়ির মেধাবী ছাত্রীটি পড়াশুনার কোন নির্দিষ্ট সময় ছিল না যখনই ইচ্ছে হতো তখনই বই পড়তো । বাবা সুকদেব কিস্কু, মা শর্মিলা কিস্কু, এবং দাদু হলেন নন্দলাল কিসকু। নন্দলাল বাবু বলেন আমরা অত্যন্ত গরিব আমরা ভাবতে পারিনি যে আমাদের বাড়ির এই মেয়েটি আমার এই আদরের নাতনি আমাদের গ্রামের তথা আমাদের অঞ্চলের মুখ উজ্জ্বল করবে। আমি অনেক কষ্ট করে ওকে পড়িয়েছি ।আগামী দিন ওর উজ্জ্বল হোক এই কামনা করি। আজ আমার খুব আনন্দ লাগছে যে আমার আদরের নাতনি জোসনা সারা রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয়ে খুশিতে আমার মুখে মিষ্টি তুলে দিল। বাবা সুকদেব কিস্কু বলেন লোকের জমিতে কাজ করি এবং নিজের একটু জমি চাষ করে কোন রকমে সংসার চলে। তার মাঝেই মেয়েটির পড়াশুনার আগ্রহ দেখে তাকে চাতরি পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দিই সেখানে হোস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করতো। মাঝে মাঝে বাড়িতে এলে পড়াশোনার মাঝে বাড়ির কাজও করতে হতো। জ্যোৎস্না কিসকুর এই সাফল্যে খুশী সারেঙ্গা ব্লকের কাঠগড়া গ্রামের গ্রামবাসী বৃন্দ খুশির খবর বাড়িতে পৌঁছতেই গ্রামের মানুষজন তার বাড়িতে ভিড় করেন হাজির হয়ে যান রাইপুর বিধানসভার বিধায়ক মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু বাসুদেবপুর বুথ তথা এই এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা বনশ্রী মন্ডল। ও পঞ্চায়েত সদস্যা পদ্মিনী কিসকু এ ছাড়া উপস্থিত হয়েছিলেন প্রাণী বন্ধু অর্চনা পাত্র ও প্রাক্তন প্রধান সুন্দরী হেমব্রম। এক চিলতে মাটির বাড়িতে যেন আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। খুশিতে চোখে জল এসে যায় ছাত্রী জ্যোৎস্নার। সে বলে ভালো রেজাল্ট হবে ভেবেছিলাম কিন্তু ফাস্ট হবো তা ভাবিনি খুব ভালো লাগছে আমার। পুরো কৃতিত্বটাই আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ এবং আমার দাদু বাবা মা সহ গুরুজনদের আশীর্বাদ। জ্যোৎস্নারা এক ভাই ও এক বোন এবং তার পাশের গ্রাম ধরমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় তার প্রথম পাঠশালা। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নলিনীকান্ত টুডু বলেন ছোটবেলা থেকেই ওর পড়াশোনার প্রতি একটা আলাদা ঝোঁক ছিল। ওর এই সাফল্যে আমি অত্যন্ত খুশি ও গর্বিত।