এক মানবতাবাদী
সঙ্গীতা কর
ক্ষুধিত শিশুর দুচোখ দেখে উচ্চ বিত্তের জারি জুড়ি
ক্ষুধার জ্বালায় জ্বলছে তারা, অথচ দেবতার থালা উঠেছে ভরি।
দেবতা দেবে বহু পুণ্যফল, তাদের পুজোয় খুশি হয়ে
শিশুর শরীর মাংসহীন হলে, কি হবে সেদিকে চেয়ে?
মন্দিরেতে রব ওঠে ‘যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা’
ধরণী মাঝে মুখ লুকিয়ে কাঁদে তখন অসহায় শিশুর মাতা।
নয় সে দেবী লক্ষ্মী রূপে, নিতান্তই এক সাধারন রমণী
দেবতা গো পারো কি তারে ক্ষমতা দিতে আশা পূরণকারীনি!
পুরোহিত মশাই শাস্ত্র পড়ে শুনিয়ে চলেন অনেক ধর্ম কাহিনী
গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ভুগতে হবে কর্মফল সে কথা মানি।
কোন কর্মফলে বলো অনাথ হয় শিশু, মেটে না তার জ্বালা?
বলবে কি দেব আসলে তোমার কানে লাগানো মস্ত তালা।
ধর্ম বলে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করো, পরে মিলবে অনেক কিছু
সে বাণীতে কি বলো বর্তমানের চাহিদারা ছাড়বে পিছু??
পথের দু’ধারে ছড়ানো শুধুই মুঠো মুঠো রাশি কৃত যন্ত্রণা
মানুষ হয়ে যদি না বোঝো তা, দিও না মিথ্যে কোনো সান্তনা।
ঘুচবে যেদিন সব ব্যবধান বিশ্বজোড়া সকল শিশু উঠবে হেসে
মানবতার বাণী গাইবো মোরা, সেদিন সবাই মিলে ভালবেসে।
বোলো না বন্ধু বোলোনা আমায় হতে নিতান্ত আধ্যাত্মিকতাবাদী
নই নাস্তিক, নই আস্তিক, আমি যে ঘোরোতর এক মানবতাবাদী।