ওরা কারা
প্রদীপ মন্ডল
ওরা কারা? বদ্ধ হয়ে আজও রুদ্ধদ্বারে?
ওরা কারা? যারা এখনো আলো খোঁজে অন্ধকারে !
বুকের পাঁজরে এখনো আঁকা যাদের হাহাকার, অসহায়ের মতো আজও ওঠে আর্তচিৎকারে !
ফুঁৎকারে যাদের নগ্ন বসন জ্বলে হয় অঙ্গার,
ক্ষুধাতুর ব্যাথার হৃদয়ে আজও জ্বলে যাদের দুচোখে অন্ধকার !
কারার ঐ লৌহকপাট ভাঙতে যারা অঝোরে রক্ত ঝরায়,
দারিদ্রতার আস্ফালনে যারা আজও অনাহারে দিন গুজরায় !
তাদের কান্না শোনোনি কি তুমি ঐ অট্টালিকার ওপার হতে?
যাদের রক্ত ঝরানো ঘামের গন্ধ জড়ানো মরণের বিনিময়ে আজও আছো তোমরা দুধে ভাতে !
চামড়ার দুর্গন্ধ নাকে শুকে যারা আজ হয়েছো সুগন্ধি আগরবাতি,
যাদের নগ্নতাকে বেচে ককটেলে মেতে সুখের আরাম কেদারাতে কাটিয়েছ সারারাতি !
তারা আজ রাতের অন্ধকারে ভাঙা ল্যাম্পপোস্টের মতো দাঁড়িয়ে,আর তোমরা আছো মুখোশের আড়ালে হয়ে মহারথী !
শোনোনি তাদের কানা, দুচোখের ঝর্ণা অঝোরে ঝরে পড়ে,
শুকনো ঝরাপাতার মতো যারা আজও পড়ে ঝরে !
অস্তি চর্ম সার,বেরুনো বুকের পাঁজর,
দাঁত খিঁচিয়ে তাকিয়ে ঐ আসমানে !
ওরা কারা? উল্কা ঝরার মতো ঝরে যাওয়া ঐ আবর্জনার স্তুপের মাঝখানে !
নিথর পাথর আজ ওরা, চোখের সামনে দেখেছে আপন কন্যার ছিঁড়ে খেতে গোপনাঙ্গ,
ওরা সাধারণ কোন জীব নয়, অসাধারণ কোন মানুষও নয়,ওরা একশ্রেণীর খেটে
খাওয়া উড়ুক্ক পতঙ্গ !
দুফাঁক করা দুপায়ে দাঁড়িয়ে,অর্ধমৃতপ্রায় দু হাত আকাশে বাড়িয়ে !
মাড়িয়ে আছে দুপায়ে ছোট্ট শিশুর মুখের ওপর, যাতে কেউ শোনেনা তার কান্না !
স্ত্রীর পরনের পোশাক কেড়ে নিয়ে ওরা আবরণ করেছে আপন কন্যা !
কত অসহায় ওরা,বেঁচে থেকেও আধমরা,শুধু দুমুঠো অন্যের জ্বালায় ওরা দিতেছে তোমাদের পায়ের নিচে ধর্ণা !
আর তোমরা?
ক্ষমতার আড়ালে, পোস্টার দেওয়ালে,দাঁত বার করে হেসে চলেছো দিবারাতি,আর বাজাও অগ্নিবীণা !
তার ছিঁড়ে যাবে, ছন্দ হারাবে,যে ছন্দ ছিঁড়ে দিয়ে আজ ওদের করেছো বেসাহারা,
দেখবে একদিন,পতাকা উড্ডীন,লজ্জা নিবারণের শেষ কাপড়টুকু নিয়ে বিজয় পতাকা বানাবে ওরা,
সেদিন বুঝবে,ওরা কারা?
ওরাই আগামীকালের প্রতিভূ,তোমাদের দীপ নিবু নিবু,
জাতিশ্বর ওরাই,তোমাদের ভাগ্যবিধাতা ওরা !!