বৈদূর্য ঘোষাল,
কলকাতা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হল একাকী নয়, মাইন্ড সেট ও স্পিচ প্লাস ও ভাষা সংসদের উদ্যোগে তথাকথিত বিশেষ ভাবে চিহ্নিত প্রতিবন্ধী শিশুদের ও তাদের বাবা মায়েদের নিয়ে এক সেমিনার। এর উদ্দেশ্য ছিল সমাজে নানাভাবে অবহেলিত,বঞ্চিত এই শ্রেণির মানুষদের ও সাধারণ জনগনের সচেতনতা বৃদ্ধি।
বক্তা হিসেবে ছিলেন ডাক্তার মনোবিদ দেবাঞ্জন পান,ড. স্পিচ থেরাপিস্ট সোমনাথ মুখার্জি, সিনিয়র আইনজীবী দেবযানী সেনগুপ্ত, আইনজীবী কৌশিক গুপ্ত, আইনজীবী মলয় কংসবনিক, ও রম্যানি ঘোষাল।
রম্যানি বলেন, তাঁর এই পথ চলা শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালে, যখন এক অসহায় মা তাঁর মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী যুবক সন্তানকে কে দেখবেন তাঁর অবর্তমানে এই ভাবনা নিয়ে তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন দেখভালের। সেই থেকে তিনি এই সমস্ত বিশেষ মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে চলেছেন।
ডাক্তার পান ও মুখার্জি বলেন তাঁরা এদের সমাজের মূল স্রোতে আনার চেষ্টা করলেও বহু ক্ষেত্রেই স্কুল, পরিবেশ এবং পথে ঘাটে তাদের হেনস্তার শিকার হতে হয়। এমনকি এই কারণে অনেক বাবা মা সন্তান সহ আত্মহত্যাও করেছেন লড়াই করতে না পেরে।
সিনিয়র আইনজীবী ম্যাডাম দেবযানী সেনগুপ্ত ও কৌশিক গুপ্ত এইসব বাচ্চাদের ও বড়ো মানুষদের জন্য কি কি আইন রয়েছে সংবিধানে, কিভাবে সেগুলো প্রয়োগ করা যায়, স্কুল, পাড়া, বা জনসমক্ষে এদের হেনস্তা করলে কোন কোন ধারায় অভিযোগ করা যায়, পাশাপাশি এদের জন্য স্কলারশিপ, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, বিভিন্ন কোর্টে এদের সুবিধা দেওয়ার আবেদন,হাইকোর্টেও এদের জন্য কোন কোন সুবিধা রয়েছে, প্রয়োজনে কোথা থেকে পেতে পারে আর্থিক সাহায্য, এসব নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেন। আলোচনায় প্রশ্নোত্তর পর্বে উঠে এল নানান বাস্তব সমস্যার কথাও।সকলেই এক সুরে বলেন এটা ব্যক্তিগত সমস্যা না ভেবে এখন সমষ্টিগত সমস্যা হিসাবে ভেবে দলবদ্ধভাবে সচেতনতা বাড়াতে হবে। কারণ এখন অধিকাংশ বাচ্চাই কোনও না কোনও অস্থিরতা ও অসুস্থতায় আক্রান্ত।আইনে অনেক কিছু বদলালোও মানুষের মনকে বদলাতে হবে, তবেই এরাও যে আর পাঁচজনের মতোই তা উপলব্ধি করবে সমাজ।
অনুষ্ঠানে ভাষা সংসদের পক্ষ থেকে বিতস্তা ঘোষাল বিশিষ্ট অতিথিদের হাতে উপহার হিসাবে বই ও গাছ তুলে দেন।ও এই ধরনের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আরও বেশি হওয়া উচিত বলে জানান।
সমস্ত অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মনোবিদ ডাক্তার শ্রেয়সী চ্যাটার্জি।
