কলকাতা হাইকোর্টে শূন্যপদে বিচারপতি নিয়োগ না হওয়ায় সিংহভাগ আইনজীবী জীবিকা সংকটে?

Spread the love

কলকাতা হাইকোর্টে শূন্যপদে বিচারপতি নিয়োগ না হওয়ায় সিংহভাগ আইনজীবী জীবিকা সংকটে?

মোল্লা জসিমউদ্দিন

জীবিকা নির্বাহ নিয়ে সংকটে কলকাতা হাইকোর্টের সিংহভাগ আইনজীবী? অনেক মামলার শুনানি সর্বপরি রায়দান না হওয়ায় মক্কেলদের ফি থেকে একপ্রকার বঞ্চিত তাঁরা। মক্কেলদের কাছে কটুকথা শোনাটা এখন অনেক আইনজীবীদের কাছে জলভাত হয়ে গেছে। জানা গেছে, ১৫ হাজারের মত আইনজীবী এবং তাঁদের ল ক্লার্ক ধরলে আরও ১৫ হাজার সর্বপরি ৩০ হাজারের বেশি আইনী পেশার সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের পেশা বর্তমানে সংকটে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বার এসোসিয়েশন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সহ কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদনে দ্রুত শুন্যপদে বিচারপতি নিয়োগের দাবি রেখেছেন। ২০২২ সালের পর কলকাতা হাইকোর্টে নুতন করে বিচারপতি নিয়োগ হয়নি।২০১৪ সালের নিরিখে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সংখ্যা ৭২।বর্তমান সময়ের সাথে জনসংখ্যার হিসাব করলে আরও বিচারপতি সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। বিচারপতির শূন্য পদ থাকায় মামলার শুনানি করা যাচ্ছে না। রয়েছে মামলার দীর্ঘসূত্রিতাও। এরফলে সাধারণ মানুষের সমস্যা হচ্ছে।শুধু কলকাতা হাইকোর্টেই ৭২টি বিচারপতি পদ থাকলেও, বিচারপতি আছেন মাত্র ৪৩ জন। ২৯ জন বিচারপতির পদ শুন্য।৪০% শূন্যপথ রেখেই বিচারদানে কচ্ছপের গতিতে যেন এগুচ্ছে কলকাতা হাইকোর্ট।  এরফলে মামলা জমে থাকছে। শুধু হাইকোর্টেই ২ লক্ষের বেশি মামলা জমে আছে। দেওয়ানি মামলা প্রায় ১ লক্ষ ৫৫ হাজার,ফৌজদারি মামলার সংখ্যা ২৮ হাজারের বেশি, অরিজিনাল সাইডের মামলা ১৭ হাজার মত ।সময়ের গতিতে কলকাতা হাইকোর্টে বেড়েছে পাহাড় সমান মামলা।  ঠিক এইরকম জায়গায় হাইপ্রোফাইল মামলার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছেন সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা।তারিখের পর তারিখ মিলছে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপ্রার্থীদের বলে অভিযোগ। অথচ মামলায় বিচারের গতি আনতে নিয়োগ করছেনা কেন্দ্রীয় সরকার ।এই মুহুর্তে কলকাতা হাইকোর্টে প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি  বিচারপতির পদ খালি রয়েছে। পাহাড় সমান মামলা। অথচ সেই হারে হচ্ছেনা মামলার নিস্পত্তি। নিদিষ্ট সময়সীমার মধ্যে শুনানি শুরু হয়নি অনেক মামলার। নেই পর্যাপ্ত বিচারপতি। বাধ্য হয়ে সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের মিলছে শুধুই ‘তারিখ’।উল্লেখ্য, ভারতবর্ষে উচ্চ আদালত স্থাপনের ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্ট প্রাচীণতার ক্ষেত্রে অন্যতম। গত ১৮৬২ সালে স্থাপিত হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বর্তমান হিসাবে কলকাতা হাইকোর্টে সর্বমোট বিচারপতি থাকার কথা ৭২ জন।এঁদের মধ্যে ৫৪ জন স্থায়ী এবং ১৮ জন অস্থায়ী। সেইজায়গায় কলকাতা হাইকোর্টে রয়েছেন ৪৩ জন বিচারপতি। দেখা যাচ্ছে এখনও ২৯ জন বিচারপতি পদ খালি রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।যা শতাংশ বিচারে  চল্লিশের  এর মত। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম কমিটি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হাইকোর্ট গুলির বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ দেয়।যা কেন্দ্র সরকার মেনে নেয়।তবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকার কলেজিয়াম কমিটির সুপারিশ কেন কার্যকর করছেনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।। ‘বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলে’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান    আনসার মন্ডল জানিয়েছেন – ” আমরা চাই কলকাতা হাইকোর্টে দ্রুত বিচারপতি নিয়োগ হোক। সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা দ্রুত বিচার পাবেন এতে”। ২৯ জন বিচারপতি পদ শুন্য থাকায় দাখিল হওয়া মামলার বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। আইনজীবী বৈদূর্য ঘোষাল জানান – ” অনেক মামলায় শুনানির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে, মামলার নিস্পত্তি ঘটছে কম।আমরা চাই দ্রুত বিচারপতি নিয়োগ হোক “। এইমুহূর্তে কলকাতা হাইকোর্টে ২ লক্ষ এর বেশি মামলা এখনও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে । রাজ্যের নিম্ন আদালত  গুলিতে  মামলা  রয়েছে ২৬ লক্ষেরও বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *