‘কেন্দ্রীয় বাহিনী আরও থাকবে কিনা? তা ঠিক করবে কেন্দ্র’ ; কলকাতা হাইকোর্ট
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উঠে পঞ্চায়েত নির্বাচন ফলাফল প্রকাশ পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার সময়বৃদ্ধি সংক্রান্ত মামলা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ পরবর্তী কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের আরো দশ দিন রাজ্যে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই অনুযায়ী সময়সীমা শুক্রবার শেষ হয়ে হচ্ছে । কিন্তু আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বলেই দাবি বিজেপি শিবিরের। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারিতে সম্পন্ন হয়েছে পঞ্চায়েত ভোট। তবে ভোট পর্ব মিটিয়েই তারা ফিরে যাননি। বরং ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে নির্বাচন মেটার দশ দিন পর্যন্ত রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখার পরামর্শ দেয় হাইকোর্ট। সেই সময় পেরিয়েছে। এখন বিরোধীদের আর্জি, -‘রাজ্যে আরও চার সপ্তাহ থাকুক কেন্দ্রীয় বাহিনী’। এদিন এমনই আবেদন জানিয়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন ব্যাঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করল বিজেপি। বঙ্গ বিজেপির আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল শুক্রবার এই মর্মে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলের পর আরও দশ দিন রাখার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই সময়সীমা আরও বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়। আবেদনকারী আইনজীবীর আরও দাবি, -‘ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও মহিলা, শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। বহু বিজেপি কর্মী ঘর ছাড়া’।তবে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম এদিন এজলাসে বলেন, -‘ এই পরিস্থিতিতে আমরা কোনও নির্দেশ দিতে পারব না। তবে আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে অনুরোধ করতে পারি। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে তাদের সিদ্ধান্তের উপরেই নির্ভর করতে হবে’। সোমবার এই মামলাটি শুনানি হবে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রকে এই মামলার কপি পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনজীবী ই-মেল মারফত তাঁর আর্জি কেন্দ্রকে জানিয়েছেন। সেই ই-মেলের কপি এবং হাতে লেখা চিঠি আগামী সোমবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাজ্যে আরও চার সপ্তাহ রাখার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানাল বিজেপি।এই বিষয়ে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিজেপি নেত্রী তথা আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। আদালতে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘এখনও বিভিন্ন জায়গায় মহিলা শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। বিজেপি কর্মীরা ঘর ছাড়া। বহু এলাকায় এখনও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটছে। তাই রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থেই আরও চার সপ্তাহ কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা হোক।’এরপরই প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে।তাই এই পরিস্থিতিতে আমরা কোনও নির্দেশ দিতে পারব না। তবে আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করতে পারি। তার পরে বাহিনী রাখবেন কিনা, সেটা তাদের উপর নির্ভর করছে’।আদালত সূত্রে প্রকাশ , শুনানি চলাকালীন আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা জানান, -‘তিনি বিষয়টি কেন্দ্রকেও মেল মারফত্ জানিয়েছেন’। সোমবার ফের এই মামলার শুনানি হবে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রকে এই মামলার কপি পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, সাম্প্রতিক সময়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন ফলাফল প্রকাশে জেলাপরিষদ – পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠনে তেমন সাফল্য পাইনি বিরোধীরা।তবে অনেক জায়গায় গ্রাম পঞ্চায়েত দখল পেয়েছে বিরোধী দলগুলি।পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের আগে রাজনৈতিক হিংসা এড়াতে এবং নিরাপত্তা পেতে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার সময়সীমা বৃদ্ধিতে তৎপর বিজেপি। তাই হাইকোর্টে মামলা দাখিল করেছে তারা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।