খায়রুল আনাম,
কেন্দ্রের কৃষি বিল নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা : লকেট
কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার যে কৃষি বিল নিয়ে এসেছে, তাতে কৃষকদের স্বার্থ, উৎপাদিত ফসলের অধিকার থেকে কৃষকরা কোনওভাবেই বঞ্চিত হবেন না বলে শনিবার ২৬ সেপ্টেম্বর বীরভূমের বোলপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মত প্রকাশ করলেন রাজ্য বিজেপি নেত্রী তথা সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। এদিন নির্ধারিত সময়ের ঘণ্টা দেড়েক পরে বিজেপি কর্মীদের চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যেই তাঁকে এই সাংবাদিক সম্মেলন করতে হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে দলীয় পুরুষ, মহিলা কর্মীরা এতো সংখ্যায় কী ভাবে ঢুকে পড়লেন, সে প্রশ্নও ওঠে বিজেপি কর্মীদের একাংশের মধ্যে থেকে। এদিন লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, একজন কৃষক যখন তাঁর উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে যান, তখন তিনি তার সঠিক দাম পান না। কিষাণ মাণ্ডিতে গিয়েও তাঁদের ন্যায্য দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হয়। নতুন এই নীতিতে কৃষকদের স্বার্থ একশোভাগ সুনিশ্চিত থাকবে। এনিয়ে দুঃশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। কৃষক হিমঘরে যখন ফসল রাখবেন তখনও তিনি নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কৃষকদের মধ্যে নানান বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। আমাদের দেশের কৃষক সমাজ এখনও সেই অর্থে শিক্ষিত নন, তাই তাঁদের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বিভ্রান্তি ছড়াতে সুবিধা হচ্ছে। কিন্তু আমরা কৃষকদের পাশে থেকে সর্বদাই তাঁদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত রাখবো বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। রাজ্যে গরু পাচার নিয়ে যে শোরগোল শুরু হয়েছে, সে ব্যাপারে তাঁর মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি সরাসরি অভিযোগ করে বলেন যে, এটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদান্যতাতেই হচ্ছে। পিসি-ভাইপো মিলে এই পাচার চক্রটা চালাচ্ছে। সামনে বিধানসভা ভোট। এই গরু পাচারের টাকার ভাগবাটোয়ারা থেকেই ভোটের খরচা তোলা হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। সেইসাথে তিনি বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম উচ্চারণ না করেই বলেন, এই জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের যে নেতা রয়েছেন তিনি গরু পাচার, বালি পাচার-সবকিছুর সঙ্গেই যুক্ত থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে এরাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে তাঁরা এইসব বেআইনী কাজের হিসেব বুঝে নেবেন বলেও তিনি দাবি করেন। দলের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা মাঠের পাঁচিল ভাঙার বিষয়টি সরেজমিনে দেখতে এসে এখানে মন্তব্য করেছিলেন যে, পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কেননা, এই মাঠে মদ, গাঁজা, আফিমের আসর বসছে। এই মাঠে সেক্স রেকেট চলছে বলেও তিনি মন্তব্য করেছিলেন। এ ব্যাপারে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরেই শান্তিনিকেতনে আসছি। এমনটা ভাবাই যায় না। তবে, যে ভাবে পৌষমেলা মাঠের ফটক ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে, তারও তিনি নিন্দা করেন। পৌষমেলার মাঠ পরিদর্শন করতে এসে একইভাবে বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার সহ-সভাপতি প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরাও অগ্নিমিত্রা পালের মন্তব্যের প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, ওই মন্তব্য যিনি করেছেন তিনি একটা ‘ননসেন্স’। লকেট চট্টোপাধ্যায় এতখানি রুঢ় ভাবে না বললেও, অগ্নিমিত্রা পালের মন্তব্যের বিরোধীতা করে অনুপম হাজরার পথেই হাঁটলেন বলা যায়।।
ছবি: সাংবাদিক সম্মেলনে লকেট চট্টোপাধ্যায়।