সেখ সামসুদ্দিন,
পরিস্থিতি এমনই, গানও যেন সুরের সঙ্গে ‘সোশ্যাল ডিসট্যান্স’ মেইনটেন করছে। চারিদিকে শুধুই আতঙ্ক, মৃত্যুমিছিল, মন খারাপের রেশ। মাস্কে মুখে ঢেকে পথ হাঁটতেও পথিকের যেন অন্তত ক্লান্তি। কবে কাটবে এই সময়? জানে না কেউ। বাইরে প্রবল গরম, ভাইরাসের দুরন্ত দাপট, টিভি-সোশ্যাল মিডিয়ায় শুধুই মৃত্যুর আপডেট! আবার তারই মাঝে থাবা বসাচ্ছে প্রবল রক্ত সঙ্কট। একে প্রবল গরম, তার মধ্যে আজ থেকেই গোটা দেশ জুড়েই ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সি কারও কোভিড ভ্যাকসিন নিতে আর কোনও বাধা থাকছে না। ফলে, গরমের স্বাভাবিক রক্ত সঙ্কট, তার মধ্যে করোনার প্রবল দাপাদাপি, রক্ত সঙ্কট কোথায় গিয়ে ঠেকবে এবার? সেই দুশ্চিন্তা থেকেই এবার এগিয়ে এল বাংলা ব্যান্ড ‘ক্যাকটাস’। ক্যাকটাস-এর লিড ভোকালিস্ট সিধুর বাড়িতেই গত শনিবার আয়োজন করা হয়েছিল রক্তদান শিবিরের। সেখানে রক্ত দেন মোট ১২ জন। করোনা পরিস্থিতিতে বেশি মানুষকে আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। সিধু বলছেন, ‘আসলে ভীষণ নেগেটিভ একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। চারিদিকে মানুষের মৃত্যু। তারই মধ্যে এবার শুরু হতে চলেছে রক্তের সঙ্কট। সেই ভাবনা থেকেই আমাদের ছোট্ট প্রয়াস।’ এদিন একে-একে সকলে যখন রক্ত দিচ্ছেন, তখন সিধু গান ধরেছেন, ‘ভালো আছি, ভালো থেকো/ আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো…’। আসলে ভ্যাকসিন নেওয়ার বিধিতে স্পষ্টই বলে দেওয়া হচ্ছে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ২৮ দিনের মধ্যে রক্তদান করা চলবে না। আর এই সময়সীমা পেরোতে না পেরোতেই চলে আসছে দ্বিতীয় ডোজের সময়। ফলে রক্তদাতার হাত পা বাঁধা দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে। প্রতি বছর গ্রীষ্মে যে রক্তের সংকট দেখা দেয়, তা থেকে রাজ্যবাসীকে বাঁচাতে এই সময়টাতেই গোটা বাংলা জুড়ে রক্তদান চলে। আর তাতে মুখ্য ভূমিকা নেন এই ১৮-৪৫ বছর বয়সিরাই। কিন্তু এবার পরিস্থিতি আলাদা। একদিকে করোনার বাড়বাড়ন্তের কারণে রক্তদান আয়োজন করা করা সম্ভব হচ্ছে না, তেমনই প্রাণে বাঁচতে তরুণ প্রজন্ম ভ্যাকসিন নিলে রক্তদানের পথও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমন এক পরিস্থিতিতে সিধুদের এই কর্মসূচি আকারে ছোট হলেও তারিফযোগ্য তো বটেই।