এখনও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে সিবিআই
ক্যানসার আক্রান্ত বগটুই গণহত্যার অভিযুক্ত ছোট লালনের মৃত্যু
খায়রুল আনাম
বেশ কিছুদিন কলকাতায় চিকিৎসাধীন থাকার পরে শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হলো ক্যানসার আক্রান্ত শেখ কামরুল ওরফে ছোট লালনের। বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের শেখ ভাদু ছিলেন স্থানীয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৎকালীন উপ- প্রধান। ২০২২ সালের ২১ মার্চ সন্ধ্যায় শেখ ভাদুকে রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে বোমা মেরে ও গুলি করে খুন করা হয়। আর এই খুনের বদলা নিতে ওই রাত্রেই রামপুরহাটের একটি পেট্রোল পাম্প থেকে ক্যানভর্তি করে পেট্রোল টোটোয় চাপিয়ে বগটুই গ্রামে নিয়ে যায় শেখ ভাদুর অনুগামীরা। প্রথমে তাঁরা গ্রামে ব্যাপক বোমাবাজি করে আতঙ্ক তৈরী করে। ওই সময় গ্রামেরই একটি ঘরে আশ্রয় নেয় কয়েকজন। শেখ ভাদুর অনুগামীরা সেখানে গিয়ে ঘরের দরজা বাইরে থেকে শিকল দিয়ে বন্ধ করে দিয়ে ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দশজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে। এই খুনের ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলো এই ছোট লালন। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই গণহত্যার তদন্তভার নেয় সিবিআই। সেই সময় এই গণহত্যার ঘটনার বিভৎসতায় আঁতকে উঠেছিল গোটা বিশ্ব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বগটুই এসে মৃতের পরিবারগুলির হাতে আর্থিক সহযোগিতা তুলে দেন এবং স্বজনহারা প্রতিটি পরিবারের একজন করে সদস্যকে সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দেন।
এই গণহত্যার পরেই ফেরার হয়ে যায় অন্যতম অভিযুক্ত ছোট লালন। পরে তাঁকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে সিবিআই। শেখ ভাদুর দাদা শেখ বাবর আলি খুনেও অভিযুক্ত ছিলেন এই ছোট লালন। জেলে থাকাকালীন অবস্থায় ছোট লালনের মুখে ক্যানসার ধরা পড়ে। তাঁর পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে মাস দুয়েক আগে তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। তারপর থেকেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল কলকাতায়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে দু’দিন আগে তাঁকে রামপুরহাটের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই মঙ্গলবার ২ জানুয়ারি প্রয়াত হলেন ছোট লালন।