মোল্লা জসিমউদ্দিন,
সুকান্ত ঘোষ,
ফের উত্তপ্ত হতে চলেছে মঙ্গলকোট। ইতিমধ্যেই শাসকদলের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর বিজেপির অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মঙ্গলকোটের নুতনহাটে সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে ক্ষমতাসীন নেতৃত্বের শুরু হয়েছে মাথাব্যথা। আবার সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতির অনলাইন প্রচার ঘিরে মঙ্গলকোটের চাণক অঞ্চলে দুই গেরুয়া কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বাহিনীর বিরুদ্ধে। যদিও শাসক দলের তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে গ্রাম্য বিবাদ বলে দাবি রাখা হয়েছে। অভিযোগ – দাবি, পক্ষে বিপক্ষে যাই থাকুক। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে – ফের উত্তপ্ত হতে চলেছে মঙ্গলকোটের বিভিন্ন এলাকা।গত পঞ্চায়েত ভোটে দলীয় প্রার্থীর টিকিট থেকে মনোনয়ন নিয়ে শাসক দলের যে সশস্ত্র বিবাদ ঘটেছিল। তা কারও অজানা নয়৷ রাজ্যের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী কে পুলিশি নিরাপত্তার অভাব দেখিয়ে একপ্রকার তাড়িয়েছিল দলের একাংশ। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা ভুলেন নি সিদ্দিকুল্লাহ। এনআরসি বাতিলের বিরুদ্ধে তৃনমূলের সংখ্যালঘু মুখ হয়ে উঠেছেন৷ দিনরাত এক করে গোটা বাংলা চষে বেড়িয়েছেন মুসলিমদের একসুতোয় রাখার উদ্দেশ্যে। অনেকখানি সফলতা পেয়েছেন। গত ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত রুখতে তৃনমূলের হাতিয়ার সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী শীর্ষ নেতৃত্বর কাছ থেকে মঙ্গলকোটে হৃত সম্মান ফিরিয়ে আনার ছাড়পত্র পেয়েছেন বলে বিশস্ত সুত্রে প্রকাশ। ফলস্বরূপ গত ১০ জুন মঙ্গলকোটে সাংবাদিক সম্মেলন চালালেন বিজেপির অপপ্রচারের বিরুদ্ধে। যেসব বিধায়ক অনুগামীরা রাজনৈতিক লড়াই করতে বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেলবন্দি হয়েছে । তাদের জেলমুক্ত করতে অন্য প্লাটফর্মে আইনী লড়াই শুরু করছেন বলে জানা গেছে। আর এতেই রাতের ঘুম উড়ে গেছে দলের একাংশের। সামনে বিধানসভা নির্বাচনে কে প্রার্থীপদ পাবে, তা নিয়ে শাসকদলের দুই চৌধুরীর লড়াই ফিফটি – ফিফটি হয়ে গেছে। অন্যদিকে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির বাংলা দখলের রণকৌশলে সর্বভারতীয় দলীয় সভাপতি অমিত শাহ অনলাইন প্রচারে ব্যাপক সাড়া পেয়ে মুখোমুখি লড়াইতে চলে এসেছে এই রাজ্যের গেরুয়া শিবির। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে রাজনৈতিক সংঘর্ষর ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলকোটও ব্যতিক্রম নয়। চাণক অঞ্চলে দুই বিজেপি কর্মীর মাথা ফেটেছে। চাপা উত্তেজনা দেখা গেছে ওই এলাকায়। স্থানীয় থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে অস্থায়ী ক্যাম্প গড়েছে। একদা তৃনমূলের ‘নাম্বার টু’ মুকুল রায় বিজেপির রাজ্য কমিটিতে নিজ অনুগামীদের ঠাঁই পাইয়ে দিয়ে বিক্ষুব্ধ তৃনমূল কর্মীদের মন জয় করে ফেলেছেন। নিজেও কেন্দ্রীয় পূর্ণ মন্ত্রী হতে পারেন। আর এতে টগবগে মঙ্গলকোটের মুকুল অনুগামীরা। বিগত বাম জমানায় সিপিএমের হাতে খুন হওয়া তৃনমূল কর্মীদের বাড়িতে একমাত্র মুকুল রায় ছাড়া বড়মাপের কোন নেতা কে তখন দেখা যেতনা মঙ্গলকোটের মাটিতে৷সেইসব তৃনমূল কর্মী সমর্থকেরা রয়েছেন মুকুল দার অপেক্ষায়। তাই সামগ্রিকভাবে বলা যায় একদিকে শাসকদলের দুই শিবিরের যুদ্ধের দামামা বেজেছে, তার উপর এই মুহূর্তে বিরোধী দল বিজেপির মুখোমুখি রাজনৈতিক লড়াই অন্য মাত্রা আনতে চলেছে মঙ্গলকোটে। যদিও শাসকদলের তরফে কোন বিবাদ নেই নিজেদের মধ্যে বলে দাবি করা হয়েছে।এরেই মাঝে গত রবিবার মঙ্গলকোটে অনুব্রত মন্ডল পঞ্চায়েতস্তরের জনপ্রতিনিধি সহ অঞ্চল কমিটির সাথে আসন্ন বিধানসভার প্রাক প্রস্তুতি সভা সারলেন। যদিও এই সভায় ঝিলু ২ নং অঞ্চলে নেতাদের নিয়ে দলীয় ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসে।