ক্লান্ত পথযাত্রী
চিত্রা কুণ্ডু বারিক (কলকাতা)
সবাই বড় ক্লান্ত , চারিদিকে শুধু হাহাকার শব্দ আমি বাঁচতে চাই, আমি বাঁচতে চাই। কোথাও জলের তলায় ভেসে যাচ্ছে, কোথাও ভুমিকম্পে মাটির তলায় চলে যাচ্ছে , আবার কোথাও প্লেন দুর্ঘটনার পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অহরহ চিৎকার চলছে চারিদিকে হে ঈশ্বর বাঁচতে চাই আমি বাঁচতে চাই।
প্রকৃতি এখন ক্ষেপে উঠেছে কারণ সে এতো বছর শুধু মানুষের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। সুন্দর সাজানো গাছপালা ধংস করে চারিদিকে শুধু ফ্ল্যাট গড়েছি আমরা একটু নিজের ভালোর জন্য। একবার ভাবিনি কেউ গাছপালার কথা। ভাবিনি কেউ শুধু ভালো থাকার অক্সিজেন প্রয়োজন লাগে। খাওয়ার জন্য ভালো জল লাগে। সবকিছু পলিউশন আর পলিউশনে ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্নের জন্য মাঠ ঘাট ধ্বংস করা হয়েছে। মাছেদের থাকার জায়গা না রেখে মাটি বুজিয়ে বড় বড় অট্টালিকা গড়া হয়েছে। আজ মানুষ ঠিক মতো খাওয়ার জোগাড় করতে পারে না। আকাশে বাতাসে সর্বজায়গায় শুধু পলিউশন ভরে গেছে। মানুষ সুস্থভাবে নিঃশ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারে না।
রোগে আক্রান্ত হতে বেশি সময় নিচ্ছে না। অল্পতে শরীর ক্লান্ত। মানুষ আজ হাসতে ভুলে গেছে, কাঁদতে ভুলে গেছে। কথা বলতে ভুলে গেছে। ঘর বন্দি হয়ে এখন হাহাকার শব্দ আমি সুস্থ হতে চাই আমি বাঁচতে চাই। সুন্দর একটা পৃথিবী দেখতে চাই।
কিন্তু আর কিছুই করার নেই সময় থাকতে সকলেই খামখেয়ালী করে বুঝেও অবুঝের মতো চলেছে।
যত্রতত্র স্থানে নোংরা ফেলে নর্দমার মুখ বন্ধ করেছে। বন্যা তো আমারই ডেকে নিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। কলকাতাকে লণ্ডন তৈরি করতে গিয়ে সাগরকে আহ্বান জানানো হয়েছে। অবহেলা করা হয়েছে এই পৃথিবীকে।
ঈশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সবাই চলছে। তিনি আমাদের একটি সাজানো বাগান উপহার দিয়েছিলেন। নদনদী, আকাশ বাতাস, গাছপালা কোনো কিছুই অভাব ছিল না।
এখন আমাদের দিন গোনা ছাড়া কিছুই করার নেই। এখন মৃত্যুকে ভয় পাচ্ছি সকলে। কাঁদছি শুধু কাঁদছি শুধু চিৎকার করে কাঁদছি।
হে ঈশ্বর তোমার প্রতি অনেক অন্যায় করেছি। তার প্রতিদান আজ বুঝতে পারছি। ক্ষমা করো প্রভু।
এখন সবাই এতোটা পথ চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। আমরা ক্লান্ত পথিক।