জ্যোতিপ্রকাশ মুখার্জি ,
সিনেমার সেই বিখ্যাত সংলাপকে নকল করে ওরা চিৎকার করে ওদের হারিয়ে যাওয়া সাতটি মাসকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলেনি। ওরা শিল্পী। কেউ খোলা মঞ্চে গান করে। কেউবা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজায়। কেউ কেউ একই সঙ্গে গান, বাজনাও শেখান। ওদের একটাই দাবি – সেই খোলা মঞ্চটা ফিরিয়ে দেওয়া হোক। যেখানে তারা আবার গান করতে পারবে, মোটামুটি স্বচ্ছল ভাবে সংসার প্রতিপালন করার সুযোগ পাবে।
আর এই দাবি নিয়েই গত ৯ ই অক্টোবর হুগলি জেলার বলাগড়, চুঁচুড়া, শ্রীরামপুর, চন্দননগর প্রভৃতি ব্লকের প্রায় দেড় শতাধিক শিল্পী চুঁচুড়া লঞ্চ ঘাট সংলগ্ন ময়দানে জমা হয় এবং মিছিল করে জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে হাজির হয়। জেলা শাসকের হাতে একটি স্মারক লিপি তুলে দেওয়া ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। যদিও পদ্ধতিগত ত্রুটির জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে তারা কিছুটা সমস্যায় পড়ে। পরে সেটা সংশোধন করে জেলা শাসকের আপ্ত সহায়কের হাতে তারা সেই স্মারক লিপি তুলে দেয়। জনৈক শিল্পীর বক্তব্য – বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা গান করে মানুষের মনোরঞ্জন করি। ফলে স্মারক লিপি দেওয়া সংক্রান্ত নিয়মকানুন না জানার জন্যই আমাদের ভুলটা হয়েছিল।
হুগলির অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী মৌমিতা দাস বললেন – বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মঞ্চে গান করে আমরা উপার্জন করি। মোটামুটি চার মাস আমরা উপার্জনের সুযোগ পাই এবং সেটার সাহায্যেই সারাবছর সংসার প্রতিপালন করি। যদি উৎসব মরশুমে সরকার আমাদের মঞ্চে গান করার অনুমতি না দেয় তাহলে আমরা চরম আর্থিক সংকটে পড়ব। সন্তানদের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দেওয়া কষ্টকর হয়ে উঠবে।
একই সুর শোনা গেল আর এক শিল্পী সঞ্জিত চ্যাটার্জ্জীর মুখে। তিনি বললেন – আমরা তো গান ছাড়া অন্য কাজ পারিনা। সেটাই আমাদের আয়ের একমাএ উৎস। তাই আমরা আজ জেলা শাসকের কাছে এসেছিলাম যাতে তিনি আমাদের আবেদন সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করেন।