মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,
বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণনের ডিভিশন বেঞ্চে গঙ্গাসাগর মেলায় গাইডলাইন চেয়ে মামলার শুনানি চলে। সেখানে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রাজ্যের অবস্থান সহ পরিকল্পনা গুলি জানতে চেয়েছে। যদিও প্রধান বিচারপতি এদিন মামলার শুনানিতে পর্যবেক্ষণে কেরালার সবরীমালা মেলার দর্শনার্থীদের অনুমতির প্রসঙ্গ টেনেছেন।’করোনা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে একদিনে ৫ হাজার দর্শনার্থী যেতে পারেন সময়ের ব্যবধানে। তাছাড়া মন্দিরের ভেতর ২০ জন দর্শনার্থী যেতে পারেন’। তবে সবটাই অনলাইনে আবেদন কেন্দ্রিক। তাহলে পুলিশ প্রশাসনের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে সুবিধা হয়।১৯৭৬ সালে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রাজ্যের বিশেষ আইনও রয়েছে। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আজ দুপুরে এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে চুড়ান্ত নির্দেশ জারি করতে পারে।কেননা আর হাতে মাত্র দুটি দিন বাকি এই মেলা শুরু হতে।মকরসংক্রান্তি উপলক্ষে রাজ্যের সর্ববৃহৎ ধার্মিক মেলায় গাইডলাইন চেয়ে মামলার চুড়ান্ত নির্দেশ জারি হতে পারে আজ।কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণন এর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে। গত ৪ জানুয়ারি সোমবারই সমাজকর্মী অজয় দে আইনজীবী সব্যসাচী চট্টপাধ্যায় এর মাধ্যমে করোনা আবহে এবারের গঙ্গাসাগর মেলায় রাজ্য সরকারের গাইডলাইন সহ দক্ষিণ ২৪ পরগণার গঙ্গাসাগর এবং কলকাতার বাবুঘাটে করোনা স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ প্রয়োগ ( কনটেন্টমেন্ট জোন) চেয়ে মামলা দাখিল করেন।কেননা শুধু এই রাজ্যেই নয় সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে সাধুসন্ত সহ লাখো লাখো ধর্মপ্রাণদের সমাগম ঘটে এই সাগরমেলায়।সাগরদ্বীপ – কপিলমুনির আশ্রম সহ মেলা চত্বরে প্রচুর সমাগম ঘটে ভক্তদের। ভারতবর্ষে কুম্ভমেলার পরেই দ্বিতীয় বৃহত্তম মকরসংক্রান্তি মেলা হিসাবে পরিচিত এই গঙ্গাসাগর মেলা।মামলাকারী অজয় দে ইতিমধ্যে দুর্গাপূজা – কালিপুজো – জগদ্ধাত্রী পুজো – ছটপুজোয় করোনা স্বাস্থ্যবিধির কঠোর অবস্থান চেয়ে মামলা করেছিলেন। যার সূত্র ধরে কলকাতা হাইকোর্ট বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজাতে ‘নো এন্ট্রি’ জোন পর্যন্ত গড়ার নির্দেশ দিয়েছিল। মামলাকারীর দাবি – ‘ মারণ ভাইরাস করোনার প্রকোপ এখনও কমেনি, উল্টে ইংল্যান্ডে করোনার সবথেকে মারাত্মক করোনা ভাইরাস ‘নে’ মিলেছে।যা ভারতবর্ষে উপস্থিতির জানান দিয়েছে।তাই সার্বিক ভাবে জনসমাগম এড়িয়ে যাওয়াটায় শ্রেয়’। উল্লেখ্য, বর্ষবরণ উৎসবেও কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য পুলিশ প্রশাসন কে করোনা স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ প্রয়োগে নির্দেশ জারি করেছিল।তাতে আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন – ‘গঙ্গাসাগর মেলা নিয়েও হাইকোর্ট রাজ্য কে গাইডলাইন বেঁধে দিতে পারে’।যদিও রাজ্য সুপ্রিম কোর্ট অবধি কুম্ভমেলা কে উদাহরণ টেনে আপিল করার প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, আগামী ৯ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি দক্ষিণ ২৪ পরগণার সাগরদ্বীপ – কপিলমুনির আশ্রমে শুরু হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা।জেলা প্রশাসন বিকল্প হিসাবে ভার্চুয়াল প্রদর্শনীতে ইতিমধ্যে জোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। পাশাপাশি যাতায়াত পথে বিভিন্ন স্বাস্থ্য শিবির সহ ভীড় এড়াতে সবরকম প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে।এখন দেখার আজ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণনের ডিভিশন বেঞ্চ গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রাজ্যের অবস্থান জেনে কি নির্দেশ জারি করে?