গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের লক্ষ্য কি পুরন্দপুর – পাঁচুন্দি?

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন ,

গরু পাচার মামলায় কি পুরন্দরপুর – পাচুন্দির নাম আসতে পারে?


দফায় দফায় গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের তৎপরতা বেড়েছে এই রাজ্যে। গত বৃহস্পতিবারও কলকাতার মানিকতলা সহ রাজ্যের বেশ কয়েক জায়গায় হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। ইতিমধ্যেই এক অবসরপ্রাপ্ত বিএসএফ কর্তার শ্বশুরবাড়ীর কোটি কোটি টাকার বেআইনী অর্থের সন্ধান পেয়েছে এই গোয়েন্দা সংস্থা। গরু পাচার চক্রের মূল মাথাকে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ বারবার আনে রাজ্যের শাসক দলের। সিবিআই কিংবা এনআইএ, ইডি কিংবা অন্য কোন কেন্দ্রীয় সংস্থার বাড়বাড়ন্ত দেখা যায় বলে অভিযোগ । ইতিমধ্যেই বাংলার বেশিরভাগ ঘটনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় খবরদারী চলছে বড্ড বেশি বলে দাবি তৃণমূলের।সিবিআইয়ের বেড়াজালে গরু পাচার চক্রে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ ক্রমশ ভাবাচ্ছে শাসক দলের বেশকিছু নেতা সহ পুলিশের একাংশদের কে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সরব হয়েছেন ‘রাজ্য কে না জানিয়ে কেন্দ্রীয় খবরদারী নিয়ে’।গরু পাচারে বিএসএফের ভুমিকা নিয়ে রীতিমতো সিরিয়াস তদন্তের পথে সিবিআই। তবে মূল লক্ষ্য টা যে আলাদা, তা অনেকেই এখন থেকে টের পাচ্ছে। সিবিআই অবশ্য নিরপেক্ষতা বজায় রাখার দাবি সর্বদা করে থাকে।অভিযোগ, দক্ষিণবঙ্গের গরুপাচার চক্রের জায়গা গুলির মধ্যে বীরভূমের পুরন্দপুর,কেতুগ্রামের পাচুন্দির নাম সবার উপরে উঠে আসে। পুরন্দপুর থেকে ফুটিসাঁকো সড়কপথে কখনো চারচাকায় আবার কখনো পাইকেরদের হাঁটা পথে গরুর দলদের নিয়ে যেতে দেখা যায়। সম্প্রতি বীরভূমে একটি কনটেনারে চাপাচাপি করে গরু আনতে গিয়ে দমবন্ধ হয়ে মারা পরে কুড়ির বেশি গরু।রাজ্য পুলিশে একটু কান পাতলেই শোনা যায়, গত পঞ্চায়েত ভোটে ( বিরোধীশুুুন্য করার জন্য ) এক পুলিশ কর্তা প্রাইজ পোস্টিং নিয়ে বীরভূমে গেলে তাঁর পুরন্দপুর সহ বেশ কয়েক জায়গায় নিয়মিত পুলিশি অভিযান গরু পাচার চক্রের সিন্ডিকেটদের মাথাব্যর্থার কারণ হয়ে উঠে। এইরুপ অভিযানের কিছু সময়ের মধ্যেই তিনি গ্যারেজ পোস্টিং পেয়ে যান বলে দাবি। যদিও পুলিশের তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পুরন্দপুরের এই ঘটনা টি সহ বেশকিছু ঘটনা সিবিআইয়ের নজরে এসেছে বলে বিশস্ত সুত্রে প্রকাশ। গরুপাচার কান্ডে কেতুগ্রামের পাচুন্দি হাটের ভূমিকা সর্বাপেক্ষা গুরত্বপূর্ণ বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।গরুর হাটগুলি একসময় চাষাবাদের বলদ গরুর সন্ধানের জন্য বিবেচিত হত৷ তবে চাষাবাদে আধুনিকতার ছোঁয়া আসায় বিশেষত ট্রাকটর, হ্যান্ড ট্যাক্টরে জমি চাষ হওয়ায় লাঙল দিয়ে বলদ গরুর চাষের গতি কমিয়েছে৷ একপ্রকার বলদ গরু দিয়ে চাষাবাদ উঠে গেছে বললেই চলে৷ ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে গরুর হাট গুলি এখন বাংলাদেশ পাচারের যোগসূত্র হিসাবে পরিচিত পেয়েছি সর্বাধিক বেশি৷ দক্ষিণবঙ্গের গুরত্বপূর্ণ গরুর হাট হিসাবে বীরভূমের সিউড়ি সংলগ্ন পুরন্দপুর হাট অন্যতম। এটি ঝাড়খন্ড থেকে মহম্মদবাজার হয়ে পুরন্দপুরে ঢুকে গরুর গাড়িগুলি ঢুকে। এরপর ইলামবাজারের সুখবাজার গরুর হাটে ( জঙ্গল পথে) আসে গাড়ি গুলি। সিউড়ি থেকে ফুটিসাঁকো পথ ধরে আবার কেতুগ্রামের পাচুন্দি গরুর হাটে আসে গরুর গাড়ি গুলি। বেশিরভাগ গরুর গাড়ি ফুটিসাঁকো থেকে মুর্শিদাবাদ ঢুকে বাংলাদেশ সীমান্তে হাজির হয় একশ্রেণির স্থানীয় থানার পুলিশ এবং শাসক দলের প্রভালশালী নেতাদের মাসোহারার ভিক্তিতে। যদিও পুলিশ এবং শাসক দলের পক্ষে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের পাচুন্দিতে জনৈক আশীষ বাবুর হাত ধরে গরুর গাড়ি গুলি কাটোয়ার সিপাহদিঘীর মোড় ( যাজিগ্রাম) হয়ে নবদ্বীপ – কৃষ্ণনগর ধরে নদীয়ায় বাংলাদেশ সীমান্তে যায় গরুর গাড়ি গুলি। সিবিআই গরু পাচার মামলায় যেভাবে তদন্ত চালাচ্ছে, তাতে দক্ষিণবঙ্গের সর্ববৃহৎ গরুর হাট গুলির ভুমিকা উঠে আসাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *