গাইডলাইন বেঁধে দিয়ে মাধ্যমিকের নির্ধারিত সূচিতে হস্তক্ষেপ করলো না হাইকোর্ট

Spread the love

গাইডলাইন বেঁধে দিয়ে মাধ্যমিকের নির্ধারিত সূচিতে হস্তক্ষেপ করলো না হাইকোর্ট

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে উঠে মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়সূচি সম্পর্কিত মামলা।পরীক্ষা শুরুর মাত্র কয়েকদিন আগেই নতুন সময় নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। দুপুর ১২ টার বদলে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে পরীক্ষা শুরুর কথা জানানো হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করেই মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলায় রাজ্যের যুক্তি শুনে কার্যত ভর্ত্‍সনা করলেন বিচারপতি বিশ্বজিত্‍ বসু।বিজ্ঞপ্তিতে সঠিক কারণ কেন জানানো হল না? তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। তবে সময় পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে কোনও হস্তক্ষেপ করেনি আদালত। সে ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের বিভ্রান্তি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন  বিচারপতি।বিচারপতি বসু এদিন বলেন, -‘ সময় পরিবর্তন যুক্তিযুক্ত নয়, তবে এখন এটা পরিবর্তন করতে বললে, নতুন সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাতে আরও বিভ্রান্তি বাড়তে পারে’। বিচারপতি এদিন এজলাসে শুনানি পর্বে রাজ্যকে প্রশ্ন করেন, ‘হঠাত্‍ পরীক্ষা শুরুর ১৫ দিন আগে কেন এই সময় পরিবর্তন করা হল?’ উত্তরে রাজ্য জানায়, ‘রাস্তার যানজট।’ এ কথা শুনে বিচারপতি বলেন, ‘বোগাস যুক্তি। হঠাত্‍ এই বছর, এই সময়ে আপনাদের এটা মনে পড়ল কেন? এইসব ফালতু যুক্তি দিয়ে আপনাদের কর্তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।’ তবে পরীক্ষার্থীরা নতুন করে বিভ্রান্তিতে পড়ুক, তা চান না বিচারপতি।রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, -‘ এবার নতুন করে ৩০ জানুয়ারি থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। এখন প্রতিটি জেলায় জেলাশাসক, এসডিও ও এস আই অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা আছে’। কন্ট্রোল রুমের বিষয়টা যাতে বিজ্ঞাপন করে আরও বেশি পড়ুয়াদের জানানো হয়, সেই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। প্রয়োজনে শুক্রবার থেকেই রাজ্য হেল্পলাইন নম্বর চালু করবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে সমস্যায় পড়লে ওই নম্বরে জানাতে পারবে। পুলিশ তাদের স্কুলে পৌঁছনর ব্যাবস্থা করবে। বিচারপতি রাজ্যকে কার্যত ভর্ত্‍সনা করে বলেন, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ভাবে এইসব করা হচ্ছে। এটাকে কোনওভাবে সমর্থন করা যায় না।’রাজ্যের সমস্ত পরীক্ষার্থীর কথা মাথায় রেখে রাজ্যকে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে সঠিক সময় পৌঁছতে বেশ কিছু পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।সেই পদক্ষেপ গুলি নিশ্চিত করে আগামী ৩১ জানুয়ারি আদালতকে রিপোর্ট জমা দেবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও রাজ্য সরকার।  পদক্ষেপ গুলি হলো  ,প্রতিটি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী যাতে পরীক্ষা কেন্দ্রে সঠিক সময় পৌঁছুতে পারেন সে বিষয়ে রাজ্যকে সুনিশ্চিত পদক্ষেপ করতে হবে। প্রতিটি থানা ওয়ারি মাইকিং করতে হবে। যাতে পরীক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়লে পুলিশ বা প্রশাসন তাদের সঠিক সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেবে। পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য পর্ষদকে একাধিক হেল্পলাইন নম্বর চালু করতে হবে। হেল্পলাইন নম্বর সহ পরীক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়লে স্থানীয়ভাবে কোথায় যোগাযোগ করবেন, তার যাবতীয় তথ্য দিয়ে বিজ্ঞপ্তি ও বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রকাশ করতে হবে পর্ষদকে। পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের পৌঁছনোর জন্য প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা সচল রাখতে হবে রাজ্যকে। কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে পড়লে বা পরীক্ষা কেন্দ্রে অসুস্থ হলে, তার জন্য কী কী উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা রিপোর্টে জানাতে হবে পর্ষদকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *