‘গ্রেপ্তারের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও কেন হেফাজতে রেখে ট্রায়াল করতে চাইছে ইডি?’ মানিকের স্ত্রী – পুত্র মামলায় হাইকোর্ট 

Spread the love

 ‘গ্রেপ্তারের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও কেন হেফাজতে রেখে ট্রায়াল করতে চাইছে ইডি?’ মানিকের স্ত্রী – পুত্র মামলায় হাইকোর্ট 

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

 শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে উঠে প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি  মানিক ভট্টাচার্য এর স্ত্রী এবং পুত্রের জামিন বিষয়ক মামলা। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন প্রাথমিক পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকেও গ্রেফতার করেছে ইডি । এদিন  মানিকের স্ত্রীর জামিন মামলার শুনানি চলে  কলকাতা হাইকোর্টে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এই মামলার শুনানি চলে । এদিন এই মামলার শুনানি পর্বে সিঙ্গেল বেঞ্চ  জানতে চায়, -‘ মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যকে গ্রেফতারের এত মাস পর এমন কী হল যে হেফাজতে রেখে ট্রায়াল করতে চাইছে ইডি?’ আগামী সোমবার ফের এই মামলার শুনানি হবে।আদালতের পর্যবেক্ষণ, -‘ মূল অভিযুক্ত তাঁর স্বামী। শতরূপার প্রমাণ নষ্ট করার আশঙ্কা বা পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে। গ্রেপ্তারের পর  থেকে পাঁচ মাসের বেশিনসময় পেয়েছে ইডি। এত দিন কী করল? ‘ আদালত জানতে চায়, -‘ হঠাত্‍ কী হল যে কাস্টডিয়াল ট্রায়াল দরকার হয়ে পড়ল?’ ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি জানান,-  ‘শতরূপা নিম্ন আদালতে জামিন চাননি। হাইকোর্টে চেয়েছেন। আচরণ নিয়ে প্রশ্ন আছে। নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন না করে হাইকোর্টে জামিন কীভাবে চাওয়া হচ্ছে?’’নিয়োগ মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য ও ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, -‘এই মামলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানিকের স্ত্রী ও ছেলের ভূমিকা’। এর আগে ইডি জানিয়েছিল, -‘দুর্নীতির টাকায় বিদেশ ভ্রমণ করেছেন মানিক-পত্নী, সন্তান’। শুধু তাই নয়, মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রীর জয়েন্ট অ্যাকাউন্টও ইডির নজরে। এমনও ইডির দাবি , -‘তাঁদের সঙ্গে অ্যাকাউন্টে এমন একজন যুক্ত, যিনি বহু আগে মারা গিয়েছেন। অথচ অ্যাকাউন্ট এখনও চলছে’। শতরূপা এই ঘটনায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত বলেও দাবি ছিল ইডির। মানিক ভট্টাচার্যের ‘কীর্তি’র সবটাই স্ত্রী জানতেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়  গত ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হয়েছেন মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরুপা ভট্টাচার্য ও তাঁর ছেলে সৌভিক ।শুক্রবার  কলকাতা হাইকোর্টে তাঁদের জামিনের শুনানি চলে ।এদিন  শুনানিতেই হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে ইডি । গ্রেফতারির পর পাঁচ মাস পেরিয়ে গিয়েছে । এত দিন পর ইডি শতরূপা ভট্টাচার্যকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়?   শুক্রবার এ নিয়ে প্রশ্ন করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ । তিনি প্রশ্ন করেন, “গ্রেফতারির এত মাস পরে হঠাত্‍ কী এমন হল, যে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি ?” শতরূপা ভট্টাচার্য শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী । শুক্রবার তাঁর জামিনের মামলার শুনানি ছিল । পরবর্তী শুনানি আগামী  সোমবার রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিন  বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, “কোন আদালতে আগে কী হয়েছে, সেটা নিয়ে ভাবছি না । মূল দোষী তাঁর স্বামী মানিক ভট্টাচার্য । শতরূপার প্রমাণ নষ্ট করা বা পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে ।  । এতদিন কী করলেন ? হঠাত্‍ কী হল যে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের দরকার পড়ল ?”শতরূপার ভট্টাচার্যের তরফে আইনজীবী  বলেন, ” গতবছর  ২৪ নভেম্বর একবার মাত্র সমন পাঠানো হয়েছিল । পরে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি শতরূপা ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করা হয়’ । মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট ছিল । সেটি ২০০৬ সালে খোলা হয়েছিল । ওই অ্যাকাউন্টে মাত্র ৯৩ হাজার টাকা ছিল বলে দাবি অভিযুক্তদের আইনজীবী।  ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, “নিম্ন আদালতে জামিন চাওয়া হয়নি । শতরূপা ভট্টাচার্যের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে । নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন না-করে কীভাবে হাইকোর্টে জামিন চাওয়া হচ্ছে ?”এদিকে নিম্ন আদালতে ইডির বক্তব্য ছিল, -‘ মানিক ভট্টাচার্য তাঁর পরিবার নিয়ে বিশ্বের একাধিক দেশ ঘুরেছেন । সেই টাকা তিনি কোথা থেকে পেয়েছেন, তাঁর হিসেব দিতে পারেননি । পাশাপাশি তাঁর ছেলের কোম্পানির মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার করেছেন । এই সব ব্যাপারে মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী সব জানতেন । তা সত্ত্বেও তিনি সেই তথ্য প্রকাশ করেননি । তাই মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রীও দোষী’ ।আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *