সাধন মন্ডল,
ষষ্ঠীর বিকেলে রাইপুরে হরিহরগঞ্জ রাজবাড়ী থেকে রাজলক্ষ্মীকে শোভাযাত্রা সহকারে রাইপুরের চাঁদুডাঙ্গা গ্রামের মা মহামায়া মন্দিরে নিয়ে আসা হলো। আজ থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত রাজলক্ষ্মী দুর্গা রূপে পূজিত হবেন মা মহামায়া মন্দিরে। রাজবাড়ি প্রাঙ্গণের লক্ষ্মী মন্দির থেকে মাকে রাস মঞ্চের সামনে তুলসিমঞ্চে নিয়ে এসে পুজো করা হয়। তারপর মাকে ঘোড়ার গাড়িতে চাপানো হয়। এ বছর মায়ের ঘোটকে আগমন উপলক্ষে ঘোড়ার গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে মহামায়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সম্পাদক সুভাষ ডাঙ্গর ও সভাপতি গোপীনাথ সিংহ দেব আমাদের জানালেন ।গোপীনাথ বাবু আরো বলেন এটা চিরাচরিত প্রথা। রাইপুরের মা মহামায়া মন্দির আজ থেকে সাড়ে 300 বছরের পুরানো । রাইপুরে রাজ পরিবারের বর্তমান অবস্থা খুবই করুণ কোন রকমে দিনপাত হচ্ছে তবুও পুরানো রীতিনীতি মেনে সমস্ত পূজা অর্চনা হয়ে থাকে রাজবাড়ীতে। এই রাজ পরিবার থেকে অষ্টমী ও নবমী তিথিতে দুটি ছাগ বলি দেওয়া হবে চাঁন্দুডাঙ্গা মহামায়া মন্দিরে যার ব্যায়ভার বহন করে রাজ পরিবার। খোল করতাল, হরিনাম সংকীর্তন, বাদ্যযন্ত্র ও লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মা হাজির হন মহামায়া মন্দিরে। আবার দশমীর দিন যথা নিয়মে শোভাযাত্রা সহকারে মাকে ফেরত নিয়ে আসা হয় হরিহর গঞ্জগড়ের রাজ পরিবারের মাতৃ মন্দিরে এখানে সারা বছর ধরে মা পুজো পান। শোভাযাত্রায় এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার ভক্ত অংশগ্রহণ করেন। দু এক বছর আগে পর্যন্ত মায়ের এই শোভাযাত্রায় কয়েক লক্ষ টাকার বাজি ফাটানো হতো এবং দীর্ঘক্ষন পথ আটকে এই বাজি ফাটানো রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল বর্তমান রায়পুর থানার আইসি সুপ্রিয় রঞ্জন মাঝির প্রচেষ্টায় ও কড়া পদক্ষেপে কড়া নজরদারিতে তা বন্ধ হয়েছে এবং স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন অগণিত ভক্তবৃন্দ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রাইপুর থানা পুলিশ প্রশাসনকে। এখানে উল্লেখ্য পথ আটকে বাজি ফাটানোর কারণে মহামায়া মন্দির থেকে হরিহর গঞ্জগড় রাজবাড়ী পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে কোন কোন বছর ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যেত বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। যা ভক্তবৃন্দদের কাছে চরম অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এখানে উল্লেখ্য পুরানো মহামায়া মন্দির ভেঙে প্রায় ৬ কোটি টাকা পেয়ে নতুন রূপে মন্দির নির্মাণের কাজ চলছে পুরোদমে এই কাজ সম্পূর্ণ হলে জেলায় একটি দর্শনীয় মন্দির হিসেবে চাঁন্দুডাঙ্গা গ্রামের মা মহামায়া মন্দির দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই কাজ সম্পূর্ণ করতে সকলের আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন মন্দির নির্মাণ কমিটির সদস্যরা।