মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,
গত ২৪ ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে নদীয়ার এক প্রবীণ দম্পতি কে দ্রুত নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া সহ পারিবারিক হিংস্বার যাতে শিকার না হয় সেই ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি হয়েছিল। নদীয়া জেলা পুলিশ কে গত ২৬ ডিসেম্বর এই আদেশনামার কপি পৌঁছে দেন মামলাকারীর আইনজীবী। পুলিশ অবশ্য বাড়িতে পৌঁছেও দেয়।তবে সেটি একপ্রকার দায়সারাভাবে। যার পরিণতিতে ফের বাড়িছাড়া হন প্রবীণ দম্পতিটি।বর্তমানে তারা ভাড়া বাড়িতে রয়েছেন । কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে ওই আদেশনামা পালনে পুলিশ পুরোপুরি নিস্ক্রিয়। এই অভিযোগ তোলে মামলাকারীর আইনজীবী গত ১০ জানুয়ারি নদীয়ার চাকদা থানার আইসি কে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠিয়েছেন। যদিও পুলিশ জানিয়েছে – তারা আদালতের নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করেছে।জীবনমুখি গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তীর ‘বৃদ্ধাশ্রম’ গানটি জীবনের ধারাপাতে কতটা বাস্তব, তার প্রমাণ ফের মিলেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে।করোনা আবহে যেখানে বাড়ীর বাইরে অযথা না বেরোনোর প্রচার চলছে অবিরত। সেখানে মাসের পর মাস ঘরের বাইরে নব্বই পার হওয়া এক প্রবীণ দম্পতি নিরাপত্তাহীনতায় পথেঘাটে ঘুরছেন। কখনো ফুটপাত আবার কখনো বা কোন আত্মীয়র বাড়ি।দাবি, সুবিচারের আশায় চাকদহ থানায় ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেছিলেন বড় দারোগার হস্তক্ষেপ চেয়ে। তবে তা হয়নি অজ্ঞাত কারনে। এইভাবেই কাটছিলো সময়ের গতিপথ। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বৈদূর্য ঘোষাল – মুকুল বিশ্বাসরা এই প্রবীণ দম্পতিকে নিজ ঘরে ফেরাতে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন। নদীয়ার চাকদহে ছাতিনতলার প্রাক্তন পুলিশ কর্মী হীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (৯০) তাঁর সম্পত্তির একাংশ এক ছেলে কে লিখে দেওয়ায় বাকি চার সন্তান ক্ষুব্ধ হয়। এই চারজন সম্পত্তি সমভাগে লিখবার জন্যে তাঁদের বাবা ও মা কে বিশ্বব্যাপী মারণ ভাইরাস করোনা সংক্রমণের মধ্যেই বাড়ি থেকে বিতাড়িত করেন বলে অভিযোগ। আগস্ট মাসে এই ঘটনা টি ঘটেছিল বলে জানা গেছে। প্রায় চারমাস ঘরছাড়া রয়েছেন প্রবীণ এই দম্পতি। গত মাসের শেষ সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে এই মামলাটি উঠে। সেখানে বিচারপতি নদীয়ার চাকদা আইসি কে দ্রুত এই দম্পতি কে বাড়ীতে পৌঁছানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। নিরাপত্তা যাতে বিঘ্ন না হয় অর্থাৎ পারিবারিক হিংস্বার শিকার যাতে না হন এই দম্পতি। সেই ব্যাপারেও নজর রাখতে বলা হয়েছিল।গত ২৪ ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের এই আদেশনামা তার দুদিনের মধ্যেই চাকদা থানায় পৌঁছে দেন মামলাকারীর আইনজীবী। পুলিশ নিয়মরক্ষার খাতিরে বাড়িতে পৌঁছেও দেয়।তবে তারমধ্যেই ফের বাড়িছাড়া হতে হয় প্রবীণ দম্পতিকে।পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি এই অভিযোগ তোলে মামলাকারীর আইনজীবী অবশেষে নদীয়ার চাকদা থানার আইসি কে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠিয়েছেন গত ১০ জানুয়ারি। এখন দেখার পুলিশ কি ব্যবস্থা নেয় গৃহহীন পুলিশের প্রাক্তন কর্মীর উপর?