মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,
, একদিকে যখন কেন্দ্রীয় সরকারের অনড় অবস্থানে দিল্লিতে কৃষক ক্ষোভ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ঠিক তখনি কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বাংলায় এসে কৃষকদের একরাশ প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেন।পাশাপাশি বাংলায় তৃণমূল কে হঠাতে সুপ্ত সাম্প্রদায়িকতার বিকাশও ঘটালেন। বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ শারদীয় উৎসব দুর্গাপূজার আবেগ কে সাথে নিয়ে এদিন প্রকাশ্য জনসভায় নাড্ডা বললেন – ” এই বাংলায় তৃণমূলের অপশাসন রুখতে ‘মা দূর্গা’র নামে শপথ নিন”।সম্প্রতি ডায়মন্ডহারবারের কর্মী সভার পর শনিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত বাংলায় বিজেপির সভাপতি জেপি নাড্ডার ছিল নানান কর্মসূচি। মন্দিরে পুজো থেকে কৃষকের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন, আবার জনসভা থেকে পদযাত্রা। তারমাঝে বেশকিছু দলীয় কর্মীসূচি ঘোষণা। এদিন দুপুর বারোটা নাগাদ দিল্লি থেকে বিমানে পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালে নামেন বিজেপির সভাপতি। এরপর অন্ডাল থেকে সোজা বিশেষ হেলিকপ্টারে চলে আসেন কাটোয়া শহর সংলগ্ন জগদানন্দপুরে।দুপুর একটায় জগদানন্দপুরে রাধা গোবিন্দ মন্দিরে পুজো দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তারপর প্রকাশ্য জনসভায় তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি।পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের নানান প্রকল্পের প্রচারক হিসাবে নিজেদের ‘সাফল্য’ তুলে ধরেন তিনি।সেখানে কেন্দ্রীয় বাজেটে কৃষিতে বরাদ্দকৃত অনুদান ৬ গুন বেশির প্রসঙ্গ তুলে এই রাজ্যে কৃষি বঞ্চনাতে সরব হতে দেখা যায় তাঁকে।বাংলার শস্যগোলা খ্যাত পূর্ব বর্ধমানে কৃষকদের কাছ থেকে একমুঠো ধান সংগ্রহ করার কৃষক সুরক্ষা কর্মসূচির সূচনা করেন তিনি আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪০ হাজার গ্রাম সভায় এইরুপ ধান সংগ্রহ করার কর্মসূচি পালনে দলীয় নেতা কর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি এরপর মুস্থোলী গ্রামের কৃষক মথুরা মন্ডলের বাড়িতে পাঁচরকম তরকারিতে মধ্যাহ্নভোজন সারেন বিজেপির সভাপতি।ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে – ‘বাংলায় প্রায় ৭৫ লক্ষ কৃষক আছেন অর্থাৎ পরিবারগত দিক দিয়ে তা দাঁড়ায় ৩ কোটিতে। আসন্ন বিধানসভা প্রাক্কালে তাই কৃষক বলয় কে গেরুয়ামুখি করতে তাই শস্যগোলা খ্যাত পূর্ব বর্ধমান কে টার্গেট করেছে বিজেপি।যদিও কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টপাধ্যায় জানিয়েছেন – ‘”বাম জমানার অবসানের পর তৃণমূল সরকার কৃষিতে যেভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়েছে এবং কৃষক বন্ধু প্রকল্পে চাষীদের পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছে এই সরকার। তাতে বিজেপির গালভরা প্রতিশ্রুতিতে পা দেবে না কৃষক সমাজ”। কাটোয়া মুস্থলী জনসভার শেষে গ্রামের পাঁচটি কৃষক পরিবারের বাড়িতে যান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগতপ্রকাশ নাড্ডা। মুন্থলী গ্রাম জুড়ে সাজোসাজো রব দেখা যায়। প্রত্যেক কৃষকের বাড়িতে তিনি গেলে প্রথমে বাড়ির মহিলারা ফুল, মিষ্টি দিয়ে স্বাগত জানায়। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় অন্নভর্তী থালা। সেই থালাতে ছিলো – দুমোঠ চাল,ডাল,সবজী। এরপর তিনি স্থানীয় কৃষক মথুরা মন্ডলের বাড়িতে মধ্যাহ্ন ভোজ সারেন। মধ্যাহ্ন ভোজে তাঁর পাতেছিল ভাত,ডাল,পাঁচমিশালি তরকারি,চাঁটনী,পাঁপড়,পায়েস। গৃহকর্তা বলেন, -“কেন্দ্রের এতো বড় মাপের নেতা আমার বাড়িতে ভোজন করেছেন এতে আমরা খুব আনন্দিত”। মধ্যাহ্নভোজ সেরে কাটোয়া থেকে হেলিকপ্টারে চেপে বর্ধমানের রোড-শোর উদ্দেশ্যে রওনা দেন। প্রায় বিকাল চারটে নাগাদ বর্ধমানে নেমে সড়ক পথে হাজির হন শহরে বীরহাটা এলাকায়। এখান থেকে কার্জনগেট পর্যন্ত শুরু করেন রোড-শো। এই রোড-শো তে লক্ষাধিক মানুষের জনসমাগম হয়েছে বলে দাবি জেলা বিজেপির।